আমি ব্যক্তিগতভাবে রাজনৈতিক কোনো দলের সাথে নূন্যতমও সম্পৃক্ত নই। তবে হাল জমানায় রকমারি ক্ষমতার অধিকারী আওয়ামী লীগে নিজেকে সম্পৃক্ত করাটা ক্ষমতান্ধদের সাথে আঁতাতের নামান্তরই বটে। সেকারণেই লীগবাদীদের লীগে পা দিয়ে রাষ্ট্রীয় বাহারি ক্ষমতার মওকা মারা থেকে নিতান্তই যে আমি যোজন যোজন দূরে দিনাতিপাত করছি, তা কারো বুঝবার জন্য পুলিশী ভেরিফাই সার্টিফিকেট অপ্রয়োজনই বটে। আওয়ামী লীগের অনেক কিছুতেই সমর্থন দিতে বিবেকে বাঁধে। সেকারণেই আওয়ামী কসমেটিক উন্নয়ন জিগির অপছন্দ করি। ‘বেশী উন্নয়ন কম গণতন্ত্র’ স্লোগানে মোটেও আস্থা রাখতে পারি না। বিচার ব্যবস্থা ‘নিরপেক্ষ’ এমনটি মানতেও লজ্জ্বা হয়। ‘দেশের মানুষ শান্তিতে আছে’, বিনা জনপ্রিয়তায় আজগুবি নির্বাচনে ভৌতিক ভোটের শেষে ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে’ এমন নগ্ন বয়ানেও কানে তালা দেয়া উপক্রম। রিজার্ভ ফা-ে চুরি, বালিশকা-, পর্দাকা-, বিনা ভোটে বিজয়ীকা-, গায়েবি ভোটকা-, নির্মাণ কাজে বাঁশকা-, ধর্ষণকা-, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে মামলা কা-, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস কা-, বিচারহীনতা কা-, বিরোধী মত দমনে গায়েবি মামলায় ভৌতিক আসাসি কা-সহ সর্বোপরি লুটপাট কা-ের মধ্যদিয়েও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, অমন আওয়ামী রসালো বয়ানে বিবেক আর বিবেকের ঘরে থাকে না। বরং বিবেক সহসায় নির্বাসনের টিকেট কাটতে উদ্ব্যত্ত হয়। সবমিলে লীগবাদীদের বর্তমানে সমর্থন করাটা রুচিহীনতার পরিচায়ক। কিন্তু পদ্মা সেতু নির্মাণে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তা ও সাফল্যে আমি মুগ্ধ না হয়ে পারি না। কারণ আর স্বপ্ন নয়। এবার স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত। পদ্মা সেতুর অবয়ব এখন দৃশ্যমান। স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে ছিল অনেক বাধা আর বিপত্তি। সেই বাধাদানকারী সবার মুখে পড়েছে চুনকালি। আর যে কলঙ্কের তিলক আঁকার অপচেষ্টা হয়েছিল বাঙালির মুখে, সেই বাঙালির মুখে আজ গর্বের হাসির ঝিলিক।
বিজয়ের ডিসেম্বর মাসে রচিত হলো আরেক বিজয়ের ইতিহাস। প্রমত্তা পদ্মার দুই পাড়কে যুক্ত করে পদ্মা সেতু জানান দিলো; সাহস আর উদ্যমের নতুন এক উচ্চতা। সব শঙ্কা, সংশয় কাটিয়ে গত ১০ ডিসেম্বর রচিত হলো পদ্মা জয়ের গল্প। দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী ও কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে একে একে ৪১টি স্প্যানে ভর করে দৃশ্যমান হয়েছে ৬.১৫ কিলোমিটারের পুরো সেতুর কাঠামো। এখন একটি একটি করে রোড আর রেলওয়ে স্লাাব যুক্ত হয়ে গড়ে উঠবে দেশে যোগাযোগের এই বৃহৎ বিনিসূতোর মালা।
পদ্মা সেতুতে সর্বশেষ স্প্যান বসানো হল মজিববর্ষের মাহেন্দ্রক্ষণে। যুক্ত হয়েছে মাওয়া-জাজিরা দুই প্রান্ত। এরমধ্য দিয়ে পূর্ণতা পেয়েছে স্বপ্ন। অবসান হয়েছে দীর্ঘ প্রতীক্ষার। রচিত হয়েছে ঐতিহাসিক সেতুবন্ধন। ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে এই দিনটি। বিশ্ব দেখছে নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষম বাংলাদেশ। সবকিছু ছাপিয়ে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ সৃষ্টি করল আরও এক বিস্ময়।
নির্মল আকাশের নিচে কলকল বেগে ছুটে চলেছে প্রমত্তা পদ্মা নদী। এ নদীর পাশেই বিস্তীর্ণ জমিতে ঘন কাশবন। নদীর মাঝে চলে বিভিন্ন নৌযান। চারদিকে অপূর্ব সুন্দর পরিবেশ বিরাজমান। সবারই চোখ এখন জাজিরার দিকে। শিমুলিয়াঘাট থেকে মাঝ নদীতে আসতেই স্পষ্ট সেতুর অবয়ব। এর একটু দূরেই পদ্মা সেতুর পিলার। বসানো হয়েছে একেকটি ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান। সেতুর সুন্দর অবয়ব আর ভারী ভারী ক্রেন এবং যন্ত্রপাতি জানান দেয়, কত বিশাল মাপের কারুকাজ। বিশ্বে আমাজন নদীর পরই অন্যতম দীর্ঘতম ও খর¯্রােতা নদী পদ্মা। এই নদীর গভীরতা ও ¯্রােতের প্রখরতা জয় করে পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান।
আশা করা হচ্ছে, ২০২২ সালের জুনের মধ্যেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের নতুন দিগন্তের সূচনা করবে পদ্মা সেতু। আর এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের ব্যয়বহুল ও চ্যালেঞ্জিং সেতু ক্লাবের তালিকায় যুক্ত হলো বাংলাদেশ। পদ্মা সেতু এখন বাংলাদেশ ও বাঙালির গর্বের প্রতীক, আনন্দের ঝর্ণাধারা। পদ্মা সেতু এখন দেশের মর্যাদার প্রতীক। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন এই পদ্মা সেতু। নানাবিধ কেলেঙ্কারির অভিযোগ থেকে মুক্ত হয়ে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হাসিনা সরকারের সাহসী উদ্যোগ আর আন্তরিক প্রচেষ্টায়।
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পদ্মা সেতু আমাদের গর্বের সেতু। এটি শুধু একটি বিশাল অবকাঠামো নয়, এটি শুধু একটি স্বপ্নের সেতুই নয়, পদ্মা সেতু নির্মাণ একটি জাতির সামর্থ্য প্রমাণের সঠিক এক অধ্যায়। এই বিশাল অবকাঠামো আত্মবিশ্বাস ও মর্যাদার প্রতীক। এ জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানাই লাখো কোটি মোবারকবাদ।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ৪ জুলাই পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সেতুর প্রথম স্প্যান এবং ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যান বসানো হয়। ওই বছরের ১০ মার্চ তৃতীয়, ১৩ এপ্রিল চতুর্থ এবং ২৯ জুন বসে পঞ্চম স্প্যান। ২০১৯ সালে ২৩ জানুয়ারি ষষ্ঠ এবং ২০ ফেব্রুয়ারি সপ্তম স্প্যান বসানো হয়। এভাবেই ক্রমানয়ে বসানো হয় সবগুলো স্প্যান।
দ্বিতল পদ্মা সেতু হচ্ছে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে। পানির অংশের মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটি প্রায় নয় কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। খুঁটির উপর বসানো ইস্পাতের স্প্যানের ভিতর দিয়ে চলবে ট্রেন। যানবাহন চলবে ওপর দিয়ে।
পিলার ও স্প্যানের পাশাপাশি সেতুতে রেলপথের জন্য স্ল্যাব বসানোর কাজ চলছে। বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। মূল সেতু নির্মাণে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ জানে, ফেরি পাড়ি দিয়ে পদ্মা পার হওয়া ভয়ঙ্কর এক অস্বস্তিকর ও দীর্ঘ ভোগান্তির কাজ। এর মধ্যে যথেষ্ট বিড়ম্বনা ও ঝুঁকিও রয়েছে। রয়েছে মৃত্যু ঝুঁকিও। প্রতিদিনই এ ধরনের অমানবিক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। অনেক সময় বৈরী আবহাওয়ার কারণে ফেরি বন্ধ থাকে। আর এটা চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। বঙ্গবন্ধু সেতু হওয়ার কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ যেভাবে যাতায়াত সুবিধা ভোগ করতে পারছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ সেভাবে পারছে না।
বলার অপেক্ষা রাখে না, একটা সময়ে পদ্মা সেতু নিয়ে নানাবিধ অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হলেও আজ আর এই সেতু স্বপ্নে আটকে নেই, যা সামগ্রিকভাবেই ইতিবাচক। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার প্রায় সাত কোটি মানুষের র্দীঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে সেতুটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে।
পদ্মা সেতুটা অনেকের কাছে কেবলই কংক্রিটের একটি সেতু। কিন্তু আমার কাছে এটি একটি স্বপ্ন। বিশাল আবেগ। একটি বড় চ্যালেঞ্জ। শত বছরের অপেক্ষা শেষে একটি ইচ্ছেপূরণ। বহুল আখাঙ্কিত পদ্মা সেতু হাজার হাজার বছরের দূরত্ব ঘুচিয়ে দুই পাড়ের মেলবন্ধন হবে।
পদ্মা সেতুর নিয়ে দেশে-বিদেশে অনিয়ম-দুর্নীতির ঝড়। অনিয়মের অভিযোগে স্বপ্নের অগ্রযাত্রায় প্রথমে তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী বাহাদুরের পদত্যাগ, দ্বিতীয়ত সংশ্লিষ্ট সচিবের কারাবাস, তৃতীয়ত প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার নিগ্রহ। অর্থায়নে এগিয়ে এসেও প্রথমে এডিবি, এরপর বিশ্বব্যাংকের আবার পিছিয়ে যাওয়া। এমন অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে যাত্রা পদ্মা সেতুর। স্বপ্নের পদ্মা সেতু দৃশ্যমান করতে মাননীয় শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখলেন। স্বপ্ন দেখালেন। নানাবিধ বাঁধার জাল ছিন্ন করে ওই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করলেন।
পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে বাঙালির মাথার ওপর হতাশার কালো মেঘ আর নেই। নেই ঘন কালো অন্ধকারও। স্বপ্ন এখন সত্যি সত্যি বাস্তবে পরিণত। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় সংকল্প আর অসীম সাহসিকতায় সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আজ পদ্মা সেতু নির্মিত।
পদ্মা সেতুর র্যাকড স্টিল টিউবুলার ড্রাইভিং পাইল প্রতি পিলারে ছয়টি পাইলের ব্যাস ৩ মিটার। পাইলের দৈর্ঘ্য ১২৮ মিটার। মোট পাইপের সংখ্যা ২৪০টি। এসব পাইপ ৯৬ থেকে ১২৮ মিটার পর্যন্ত নদীর গভীরে বসানো হচ্ছে। স্প্যানের ভিতরে থাকছে রেলপথ ও সড়কপথ। সেতুর ওপরের ডেকের প্রস্থ ২২ মিটার, নিচের ডেকে থাকবে সিঙ্গেল ট্র্যাক ডুয়েল গেজ রেললাইন, ডেকের উচ্চতা ১৩.৬০ মিটার, নেভিগেশনাল ক্লিয়ারেন্স ১৮.৩০ মিটার।
দ্বিতল পদ্মা বহুমুখী সেতুর পুরোটাই হবে স্টিল আর কংক্রিট স্ট্রাকচারে। সেতুর ওপরের তলায় যাবে চার লেনের মহাসড়ক, নিচে দিয়ে যাবে রেললাইন।
পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ায় শুধু দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষই সুফল ভোগ করবে না, এ সেতুর দ্বারা বাংলাদেশের সব অঞ্চলের তথা ১৮ কোটি মানুষ উপকৃত হবে। বর্তমানে দেশের বৃহত্তম ভৌত অবকাঠামোমূলক প্রকল্প বঙ্গবন্ধু (যমুনা) সেতু নির্মাণের ফলে যোগাযোগব্যবস্থাসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অনুরূপভাবে পদ্মা বহুমুখী সেতু দেশব্যাপী উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হবে। সেই সাথে দেশের সামাগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে। জাতীয় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ১.২ শতাংশ বাড়াসহ প্রতিবছর ০.৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য নিরসনের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
যমুনা সেতুর সড়ক ও রেল যোগাযোগ এবং অন্যান্য সুবিধার ন্যায় পদ্মা সেতুতে সংযোজিত হবে সেতুর ২ কিলোমিটার ভাটিতে ৪০০ কেভিএ বিদ্যুৎ লাইন প্ল্যাটফর্ম, ৭৬০ মিমি ব্যাসের গ্যাস পাইপলাইন এবং ১৫০ মিমি ব্যাসের অপটিক্যাল ফাইবার টেলিফোন ডাক্ট। এ ছাড়া সেতু সার্ভিস এরিয়া-১ এ থাকবে টোল প্লাজা, পুলিশ স্টেশন, ওজন স্টেশন। সার্ভিস এরিয়া-২ এ ডুপ্লেক্স বাড়ি, মসজিদ, হোটেল, মেস, চিত্তবিনোদন ভবন, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পানির ট্যাংক, ইলেকট্রিক সাবস্টেশন, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ইত্যাদি।
পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বহু ছোট-বড় কল-কারখানা, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে এবং জনসাধারণের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নৌবন্দর মোংলা ও সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল অবস্থিত। পদ্মা সেতু চালু হলে এসব বন্দরের সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে স্থাপিত হবে যোগাযোগ। উন্নত যোগাযোগব্যবস্থার ফলে যেমন ব্যয় ও সময় কমবে, তেমনই ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নেও যথেষ্ট সহায়ক হবে সেতুটি। শুধু তা-ই নয়, মাওয়া-জাজিরা অবস্থানে এশিয়ান হাইওয়ে এএইচ-এক এ পদ্মা সেতু অবস্থিত। তাই এ সেতু চালু হলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যাতায়াতব্যবস্থাসহ দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে অবস্থিত দেশগুলোর মধ্যে যাতায়াতব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হবে। আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে পদ্মা সেতু।
পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিশ্চয় বাংলাদেশের জন্য যেমন সুসংবাদ। তেমনই বহির্বিশ্বেও গৌরবের আস্থা। বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি আনন্দের, খুশির খবর। স্বদেশীয় টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করায় হল নয়া ইতিহাস রচনা। পুরো বিশ্ব দেখলো ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের বাংলাদেশের সক্ষমতা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরর্শীতা দেশের জনগণের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নের অগ্রযাত্রার নিয়ামক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফলতা ও নেতৃত্বের ফসল পদ্মা সেতু। এটা আমাদের গর্ব। পদ্মার বুকে স্বপ্নের মেলবন্ধন। বলতেই হয় ‘জয়তু শেখ হাসিনা।’ পদ্মা সেতু দেশের জন্য অনেক বড় অর্জন। অভিনন্দন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
(লেখক : এম. কে. দোলন বিশ্বাস, দৈনিক সংবাদের সাবেক সহ-সম্পাদক)