শেরপুরের নকলা উপজেলায় ধামনা, ধনাকুর্শা, উরফা, চরমধুয়া, চরবাছুর আগলা ব্রহ্মপুত্র নদের জেগে উঠা চরের মাঠসহ বিভিন্ন এলাকা এখন সরিষা আর সরিষা। সরিষা আবাদি মাঠ গুলো মধু সংগ্রহের জন্য মৌ বক্স বসানো হয়েছে। সরিষা ফুল থেকে মধু উৎপাদন এখন সর্বত্র পরিচিতি পেয়েছে। সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহে সরেজমিনে ধামনা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সরিষা ফসলের আবাদি মাঠে মৌ বক্স বসানো হয়েছে।
মৌ মৌ শব্দে সরিষা ক্ষেত গুলো যেন মূখরিত হয়ে উঠেছে। সরিষা গাছ বড় হবার পাশাপাশি এর মাথায় ফোটে হলুদ ফুল।মনে হয় প্রকৃতি যেন হলুদ শাড়ি পরিধান করে আছে। আর এই ফুল মধু উৎপাদনের প্রধান উৎস। সরিষা ক্ষেতের পাশে সারিবদ্ধভাবে স্থাপন করে ধামনা এলাকা ২২০টি মৌ বক্স। বাড়তি আয় করার সুযোগ পাচ্ছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের মোশারফ হোসেন। সাবলম্বী হয়েছেন মোশারফ হোসেনসহ বেশ কয়েকটি পরিবার। প্রতিটি বক্স থেকে সপ্তাহে ৪/৫ কেজি মধু সংগ্রহ করা হচ্ছ্ েবলে জানান। সাধারনত বছরের ৬ মাস মধু সংগ্রহের মৌসুম। বছরে ১৩/১৪বার মধু সংগ্রহ করা সম্ভব। মৌ চাষীরা জানান বাকী সময় মৌ মাছি লালন পালন করতে যে খরচ হয় তাতে পুষিয়ে উঠা কঠিন। তবে বর্তমানে মধুর দাম ভাল হওয়ায় এ বছর খরচ পুষিয়ে নেওয়া যাবে বলে আশা করছেন। সরকারিভাবে আমাদের আরো প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হলে আমরা এগিয়ে নিতে পারব এই সরিষা ক্ষেতের মৌ চাষ। তার মতে, মৌমাছি পালনে একদিকে পরিবারে সচ্ছলতা আসে, অন্যদিকে মৌমাছির বিচরণে পরাগায়নের ফলে ফসলের উৎপাদনও বাড়ে। বর্তমানে বছরে মধু সংগ্রহ ও বিক্রি করে প্রায় লাখ তিনেক টাকা আয় করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন ।
মোশারফ হোসেন মৌ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তার সাফল্য দেখে আরও অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে মৌ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস জানান। শেরপুরের নকলা উপজেলায় এ বছর ৩শ ৪০ টি মৌ বক্স স্থাপন করা হয়েছে। এ মধ্যে ধামনা এলাকায় ২শ ২০ টি এবং ধনাকুশায় ১ শ ২০টি মৌ বক্স স্থাপন করা হয়েছে এ বছর ৩শ মন মধু সংগ্রহ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ২৪ লাখ টাকা। মৌ বক্স স্থাপন এলাকায় পরাগায়ন বেশি হওয়ায় সরিষার ফলন প্রায় ১৫-২০ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। কৃষিবিভাগের পক্ষ থেকে মৌ বক্স স্থাপন এবং মধূ সংগ্রহ বিষয়ে কারিগরি কলাকৌশল বিষয়ে প্রশিক্ষন প্রদান করা হচ্ছে। মৌচাষীদের সংখা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।