উত্তরের হিমেল হাওয়া, ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় কুডিগ্রামের মানুষের জীবন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। ১৬ডিসেম্বর বুধবার কুড়িগ্রাম জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এ অবস্থায় ঠান্ডা ও কুয়াশা উপেক্ষা করে কাজে বের হতে পারছেন না শ্রমজীবি মানুষজন।
গরম কাপড়ের অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমুল ও হতদরিদ্র মানুষ। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। হাতপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ মো: নবিউর রহমান জানান, শীতের কারণে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ডায়রিয়া। তবে শীত জনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন বলে জানান তিনি।
দিনের বেশিরভাগ সময় সুর্যের দেখা না মেলায় বিকেল হতেই বাড়ছে ঠান্ডার প্রকোপ। রাত বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে শীতের তীব্রতাও। রাতজুড়ে বৃষ্টির মতো ঝড়ছে কুয়াশা। দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকছে প্রকৃতি। ফলে ঘন কুয়াশায় দিনের বেলায়ও হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন।
এতে করে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার তিস্তা, ব্রক্ষপুত্র, ধরলা, দুধকুমরসহ ছোট বড় চরাঞ্চলে বসবাসকারী হতদরিদ্র পরিবারগুলো। প্রয়োজনীয় গরম কাপড় না থাকায় অতি কষ্টে পরিবার পরিজন নিয়ে রাত কাটাচ্ছেন তারা।
সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চর সারডোবের বাসিন্দা মজলুম মিয়া জানান, কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড ঠান্ডা আর কুয়াশার জন্য কাজে যেতে পারছি না। গরম কাপড়ও নাই। ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুবই কষ্টে আছি।
কুড়িগ্রাম শহরের রিকসা চালক আমজাদ হোসেন জানান, সকাল ১০ টার আগে বের হতে পারি না। আর এসময়টা ভাড়াও কম। আয় রোজগার কমে গেছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষন অফিসের পর্যবেক্ষন সুবল চন্দ্র সরকার জানান, বুধবার জেলা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম জানান, এ পর্যন্ত জেলার ৯ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার মাধ্যমে শীতার্ত মানুষের মাঝে সরকারীভাবে ৩৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে প্রত্যেক উপজেলায় শীত বস্ত্র বিতরণের জন্য ৬ লাখ করে টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ৯ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারও বিতরণ করা হয়েছে।