পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় যুবদল ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ২২ ডিসেম্বর দুপুরে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল ভাঙচুর করেছেন বলে বিকেলে মঠবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন দলের নেতারা। উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক জানান, মঙ্গলবার সকালে শহরের উপজেলা পরিষদ সড়কে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন দুলালের বাসার পাশের মাঠে যুবদলের কর্মী সভা চলছিল। বেলা ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ ফটকের সামনে যুবদলের কয়েকজন কর্মী দাঁড়িয়ে থাকলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে তাদের ওপর হামলা করেন। এরপর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যুবদলের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সংঘর্ষে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন দুলাল, জেলা বিএনপির বিশেষ সম্পাদক কে এম হুমায়ুন কবির, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন ফরাজী, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুম বিল্লাহ, রুহুল আমিন দুলালের ছেলে খালিদ সাইফুল্লাহ আমিনসহ যুবদলের ৪০-৪৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। এদিকে, দুপুর সোয়া ১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা রুহুল আমিন দুলালের বাসার সামনে অবস্থান নিয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী রুহুল আমীন দুলালের বাসায় হামলা করেন। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন দুলাল বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করেন। এতে আমাদের প্রায় ৪০-৪৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। এরপর ছাত্রলীগের কর্মীরা আমার বাসভবনে হামলা চালিয়ে জানালা-দরজা ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। এমনকি আমাদের আহত নেতাকর্মীদের হাসপাতালে নিতেও বাধা দেওয়া হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় কয়েকজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই দফা সংঘর্ষের সময় ছাত্রলীগের অনেকের হাতেই দেশীয় অস্ত্র, রড়, দা’, চাইনিজ কুড়াল ও লাঠি দেখা গেছে। অপরদিকে, বিকেলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স হলরুমে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র মো. রফিউদ্দিন আহম্মেদ ফেরদাউসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রিয়াজ উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আরিফুল হকসহ অন্যান্য নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, যুবদলের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মী সভায় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করা হয়। যুবদলের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর মুর্যালও ভাঙচুর করেন। সংঘর্ষে বিএনপি ও যুবদল নেতাকর্মীদের হামলায় ছাত্রলীগের চার-পাঁচ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। মঠবাড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ.জ. মো. মাসুদুজ্জামান জানান, এ ব্যাপারে কোনো পক্ষ থেকে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, ফের সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।