শুষ্ক মৌসুম আসার আগেই পাবনার সুজানগরের ঐতিহাসিক খর¯্রােতা গাজনার বিল প্রায় পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। শুধু বিলের ক্যানালে কিছুটা পানি থাকলেও বিশাল বিস্তীর্ণ বিলের কোথাও আর পানি নেই। এতে বিলপাড়ের মৎস্যজীবী এবং কৃষকেরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার বিলপাড়ের বোনকোলা গ্রামের তায়জাল আলী খান বলেন গত ১০/১২বছর আওে বিলটিতে সারা বছর পানি থৈথৈ করছে। আর ঐ সময় বিলের পানিতে রুই, কাতলা, মৃগেল, চিতল, কৈ, বোয়াল, পাবদা এবং নয়নাসহ নানা প্রজাতির অফুরন্ত মাছ পাওয়া গেছে। বলা যায় মাছ আর পানি ছিল তখন সমান সমান। সুজানগর পৌরসভাসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মৎস্যজীবী তখন ওই বিল থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সেই সাথে গাজনার বিলের মাছ সে সময় সুজানগরবাসীর চাহিদা মিটিয়ে পাবনাসহ আশপাশের জেলায় সরবরাহ করা হতো। উপজেলার বিলপাড়ের উলাট গ্রামের নুরুল ইসলাম শেখ বলেন ঐ সময় মৎস্যজীবীদের পাশাপাশি বিলপাড়ের কৃষকেরা সেচনালার মাধ্যমে বিল থেকে পানি নিয়ে বিল সংলগ্ন জমিতে ধানসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করতেন। পাশাপাশি ঐ সময় গাজনার বিলকে বাণিজ্যিক রুট হিসাবেও ব্যবহার করা হতো। এলাকার ব্যবসায়ীরা সারা বছর ওই বিল হয়ে বড় বড় নৌকাযোগে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ধান ও পাটসহ বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করতেন। অথচ সময়ের পরিক্রমায় খরস্রোতা গাজনার বিল এখন একটি শীর্ণ খালে পরিণত হয়েছে। ফলে বর্ষা শেষে শুষ্ক মৌসুমে বিলের ক্যানালে ছাড়া আর কোথাও একবিন্দু পানিও পাওয়া যায়না। এতে বিলপাড়ের ঐ সকল মৎস্যজীবী এবং কৃষকেরা মাছ শিকার এবং সুষ্ঠুভাবে ফসল আবাদ করতে না পাড়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শওকত আলী বলেন ৭/৮বছর আগে বিলে সারা বছর পানি ধরে রাখাসহ বিলের বিভিন্ন উন্নয়নে প্রায় সাড়ে ৪‘শ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কিন্তু ঐ প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ায় শুষ্ক মৌসুম আসার আগেই বিল পানি শূন্য হয়ে পড়ছে। স্থানীয় এমপি আহমেদ ফিরোজ কবির বলেন গাজনার বিল যাতে এলাকার মৎস্যজীবী এবং কৃষকদের কল্যাণ বয়ে আনে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।