ময়মনসিংহের গফরগাঁও পৌরসভায় চতুর্থবারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২৮ ডিসেম্বর সোমবার প্রথম ধাপে। প্রথমবারের মতো এবারের নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের শেষ মূর্হুতে জমে উঠছে নির্বাচনী মাঠ। এবারের পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া ৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২১ জন এবং ১টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ২ জন লড়ছেন। একক প্রার্থী থাকায় ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে শাহজাহান সাজু ও বাবুল হোসেন এবং ৪, ৫, ৬নং ওয়ার্ড ও ৭, ৮, ৯নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে নিলুফা ইয়াসমিন রতœা ও পারভীন আক্তার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এবারের পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান মেয়র এস. এম ইকবাল হোসেন সুমন (নৌকা) এবং বিএনপি থেকে সাবেক উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান শাহ আব্দুল্লাহ আল মামুন (ধানের শীষ) প্রতিকে লড়ছেন। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে শুরুতেই নির্বাচনী মাঠে সরব থাকলেও বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নেই। ফলে বিএনপি প্রার্থী নিজেই একা প্রচারণা চালাচ্ছেন। ৫৫ দশমিক ৩৩ বর্গ কিলোমিটার আয়োতনের এই পৌরসভায় মোট ভোটারের সংখ্যা ২২ হাজার ২ শত ৯৬। তাদের মধ্যে নারী ভোটার ১১ হাজার ৪ শত ৩৫ জন আর পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৮ শত ৬১ জন। পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটার ৫ শত ৭৪ জন বেশি। ৯টি ওয়ার্ডে ১০টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে প্রচারণায় শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কাকডাকা ভোর থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত তাদের প্রচার প্রচারণায় মুখরিত পৌর এলাকা। কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে তারা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। করছেন উঠান বৈঠক ও ছোট বড় পথসভা। বিতরণ করছেন হ্যান্ডবিল। চলছে পোষ্টার-ফেষ্টুনসহ মাইকিংয়ের প্রচার-প্রচারণা। ভোটারদের যার যার মতো করে নানান প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। পৌর এলাকায় ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের পোষ্টারে। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনসমূহ নেতা-কর্মীসহ কেন্দ্রীয়, জেলা পর্যায়ে নেতারা প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। ১৯৯৯ সালের প্রতিষ্ঠিত গফরগাঁও পৌরসভার প্রথম এবং দ্বিতীয় প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। ঐ সময় তৎকালীন গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন আহম্মদ মজুমদার এবং এ.কে.এম জাকির হোসেন ভূঞা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর থেকে তিনটি নির্বাচনেই এখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এস.এম ইকবাল হোসেন সুমন বলেন, ২০১৫ সালে নৌকা প্রতিক নিয়ে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে গত ৫ বছর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রেখে গলিপথ, আর সিসি ড্রেন, ঢালাই রাস্তা, টয়লেট,সুপেয় পানি ব্যবস্থা, পানি ছিটানো, মশা নিধনসহ বহু উন্নয়ন পৌরশহরে দৃশ্যমান হয়েছে। বন্যা ও করোনায় অসহায়দের পাশে থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলাম। এবারও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পৌরবাসী নৌকায় ভোট দিয়ে আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী শাহ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দলের ভিতরে এখন গ্রুপিং প্রকাশ্য। তাছাড়া মামলা-হামলায় কারণে দলের নেতা-কর্মীরা এলাকা ছাড়া রয়েছে। ফলে প্রচারণায় নেই বিএনপি নেতা-কর্মীরা।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা শামসুন নাহার ভূঁঞা বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচনে লক্ষে প্রশাসনের পক্ষ হতে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।