জামালপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে একজন নারী রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বহিরাগতদের হামলা, ভাংচুর ও একজন মেডিক্যাল অফিসারকে মারধর এবং বহিরাগত ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মাঝে সংঘষের সময় পুলিশের হাতে একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নির্যাতনের ঘটনায় ২৬ডিসেম্বর শনিবার বিকালে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওইদিন বিকেলে জামালপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় নের্তৃবৃন্দ্রের সাথে এক জরুরি বৈঠকে হাসপাতালে হামলার ঘটনা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অপরদিকে চিকিৎসককের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপি) এর পক্ষ থেকে ২৭ ডিসেম্বর রোববার থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ব্যতীত অন্যান্য বহির্বিভাগ ও বাইরের বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে রোগী দেখা থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন কর্মরত চিকিৎসকগণ। ফলে জেলায় চিকিৎসা সেবা মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানাগেছে,জরুরি বৈঠক চলাকালে গত ২৫ ডিসেম্বর শুক্রবারের হামলার ঘটনা সিসিটিভি ফুটেজ প্রদর্শন করে আলোচনা, পর্যালোচনা, ও বিশ্লেষণ করে ভুক্তভোগী চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অভিযোগ শোনা হয়। তবে জরুরি বৈঠকে বহিরাগতদের পক্ষে কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
ওই বৈঠকে জামালপুর স্থানীয় সরকার বিভাগ এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ কবীর উদ্দিন, শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল জামালপুরের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. শ্যামল কুমার সাহা, পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, সিভিল সার্জন প্রণয় কান্তি দাস, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ছানোয়ার হোসেন ছানু, জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান সোহান, ইন্টার্ন চিকিৎসক রিয়াদ মাহমুদ বক্তব্য রাখেন।
পরে তারা জেলা প্রশাসনের উপসচিব পদমর্যাদার একজনকে সভাপতি করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই তদন্ত কমিটি সার্বিক বিষয় তদন্ত করে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করবেন। সেই তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ বিষয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান সোহান বলেন, হাসপাতালে হামলার ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তি মামলা দায়ের করা হবে। তিনি আরো বলেন,হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম যাতে স্বাভাবিক হয়ে আসে তা নিয়ে চিকিৎসকদের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ওইদিন উভয় পক্ষের মধ্যে যে ভাবে হামলা-পাল্টা হামলা চলছিল সময় মত পুলিশ ঘটনা স্থলে না পৌছলে বড় ধরনের অঘটন ঘটত। জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম খান জানান, রোগীর স্বজন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এ ঘটনায় কোন অভিযোগ করা হলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি জানিয়েছেন।