জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রোগির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হামলা, ভাংচুর, হামলার ঘটনায় কর্মবিরতি পালন করেছে ডাক্তাররা। হামলার ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত ২৬ ডিসেম্বর বিকালে উপসচিব পদমর্যাদায় ১জনকে আহব্বায়ক করে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই তদন্ত কমিটি আগামী ২৪ঘন্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পূর্বেই ২৬ডিসেম্বর শনিবার রাত ১০টায় জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সদর থানার পুলিশ মৃত রোগির স্বজন সাইদুর রহমান (৪০) ও শহিদুল্লাহ(৪২) ২জন আসামীকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
অপর দিকে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিব) ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এর যৌথ ডাকে গত শনিবার সন্ধা থেকে কর্মবিরতি চলছে। সারা জেলার সরকারী হাসপাতাল গুলোর জরুরী বিভাগ ব্যতিত সকল বিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারী ক্লিনিক,হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকায় চরম দূর্ভোগে পড়েছে চিকিৎসা নিতে আসা প্রত্যান্তঞ্চলের শত শত রোগী।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, চিকিৎসকদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিতকরণ, হাসপাতালের চিকিৎসক,কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশাসনিক নিরাপত্তা প্রদান এই তিন দফা দাবিতে চিকিৎসকদের অনিদ্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলছে। দাবী না মানা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জামালপুর সদর থানার ওসি মো.রেজাউল ইসলাম খান বলেন, হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান শনিবার রাত ১০টায় ৫জনসহ অজ্ঞাত আরো আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে। পরে অভিযান চালিয়ে ২জনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান।
উল্লেখ যে, গত শুক্রবার (২৫ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে পৌর শহরের ইকবালপুর আহলে হাদিস জামে মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসা করিমন নেছা (৫৫) নামে এক মহিলা মসজিদের ২য় তলা থেকে পড়ে গিয়ে আহত হন। আহত করিমনকে তার স্বজনরা জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। আহত রোগীকে মহিলা ওয়ার্ডে নিয়ে গেলে সেখানে অক্সিজেন সাপ্লাই না থাকায় পুনরায় আহতকে নিচের তলায় জরুরী বিভাগে নিয়ে আসা হয়। মৃত রোগির স্বজনদের অভিযোগ জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর কাছে আসতে বিলম্ব করায় রোগি করিমন নেছা মারা যায়। এ সময় রোগির স্বজনরা হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ডাক্তার ও ইন্টার্নি ডাক্তারদের তর্ক-বির্তক ঘটনার ঘটে। একপর্যায়ে নিহতের স্বজনরা হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এ সময় জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক চিরঞ্জীব সরকারসহ নিহতের স্বজন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান, মৃত আবদুর রহিমে ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪২), সাইদুর রহমানের ছেলে নিহাদ (১৭)সহ কমপক্ষে ১০জন আহত হয়।