কালাইয়ের রুটি বেচে চলে চারঘাটের নাদিরার সংসার
কালাই রুটি ভোজন রসিকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। মরিচ বাটা, পেঁয়াজ কুচি বা সরিষার তেল দিয়ে বেগুন ভর্তার সঙ্গে গরম কালাই রুটি মুখরোচক ও পুষ্টিকর। কলাইয়ের রুটি বিক্রি করে শীতের এ মৌসুমে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করছেন।
চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের মালেকার মোড়ে রাস্তার পাশে ফুটপাতে নাদিরা বেগমের (৫২) কালাই রুটির দোকান রয়েছে। এক চালার পলিথিনের ছাউনিতে নির্মাণ করা হয়েছে দোকানটি। এই পলিথিনের ছাউনিও একাধিকবার ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরে নাদিরা বেগম নিজ হাতে আবার সেটি গড়ে তুলেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সন্ধ্যার পর থেকে অনেকেই কালাই রুটি খেতে আসছেন নাদিরার দোকানে। দোকানে বসারও তেমন জায়গা নেই। দোকানের ভেতর ছোট ছোট কয়েকটি কাঠের পিঁড়িতে বসেন ক্রেতারা। আর নাদিরা বেগম পাশেই বসে আগুনের চুলায় তৈরি করেন কালাই রুটি। দু-একজন ক্রেতা গেলে সেই রুটি তুলে দেন তাদের হাতে।
এক যুগ আগে স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। একমাত্র ছেলে অন্যের দোকানে কাজ করে। ছেলে তার নিজের পরিবারের খরচ জোগাতেই হিমশিম খায়। এজন্য নিজের সংসার চালাতে ফুটপাতের ধারে রুটি বিক্রি করতে হয় নাদিরা বেগমকে। প্রতিদিন রুটি বিক্রি করে যে দেড়- দুইশ টাকা আয় হয়, তা দিয়েই চলে নাদিরা বেগমের সংসারের চাকা।
কালাই রুটি খেতে আসা বামনদিঘীর আব্দুর সবুর বলেন, বেগুন ভর্তা আর ধনিয়া পাতার মসলা বানানো দিয়ে কালাইয়ের রুটি অনেক সুস্বাদু। কালাই রুটি খেতে অনেক ভালো লাগে এ কারণে মাঝে মধ্যে এখানে কালাই রুটি খেতে আসি।
কথা হয় নাদিরা বেগমের সাথে, তিনি বলেন- 'একটা কালাই রুটি, মরিচের চাটনিসহ ২০ টাকা করে বিক্রি করি। বেগুন ভর্তা নিলে ভর্তার দাম ৫ টাকা করে নিই। দিনে ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মতো আয় হয়।’
নাদিরা বেগম আরো জানান, ফুটপাতে দোকান করার কারণে তাকে এখনো নানা সমস্যার মুখে পড়তে হতে হচ্ছে। কয়েকবার রাতের আঁধারে তার দোকানের ছাউনি ও চুলা ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। আবার তিনি সেগুলো নিজ হাতে গড়েছেন।