রাজশাহী পুঠিয়ায় পৌরসভা নির্বাচনে বর্তমান এমপির অনৈতিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায়,আওয়ামী লীগের পরাজয় হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন দলীয় মেয়র প্রার্থী রবিউল ইসলাম রবি। স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছে, দলের তৃণমূলের চাহিদা মোতাবেক ত্যাগী প্রার্থীদের মনোনয়ন না দেয়ার কারণে, নৌকার ভরাডুবি হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবির অভিযোগ, বর্তমান এমপি ডা.মনসুর রহমানের নির্দেশক্রমে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা নৌকার বিরোধিতা করেছেন। এমপি বিএনপির প্রার্থীর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন। যার প্রমাণ আমার কাছে আছে। আর সে কারণে এমপি ও তার অনুসারীরা প্রকাশ্যে ধানের শীষের ভোট করেছেন। তিনি আর বলেন, এবার পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়ে ছিলেন মোট ১১ জন দলীয় নেতা। তাদের মধ্যে দল আমাকে মনোনয়ন দেয়ায় তারা শুরু থেকেই আমার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। আমার পরাজয়ের পেছনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। পৌর নির্বাচনে বর্তমান এমপি কেন বিরোধিতা করেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে রবি বলেন, তিনি আমার কাছে ৩০ লাখ টাকা চেয়েছিলেন। আমি সে চাহিদা পূরণ করতে না পারায় তার একজন নিকট আত্মীয় (স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী) গোলাম আজম নয়নকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভোট করিয়েছেন, যা এলাকার সকলেই জানে।
স্থানীয় দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রবি সাবেক একজন এমপির বিশেষ ব্যক্তি হিসেবে এলাকায় বেশ পরিচিত আছে। সে সুবাদে গত পৌরসভা নির্বাচনে তিনি সহজে দলীয় মনোনয়ন পান এবং নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। এরপর রবি সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মোঃ নুরুজ্জামানের বিশেষ সহযোগিতায় নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর পর পুনঃভোট গণনার মাধ্যমে জয়লাভ করেন। রবি মেয়র পদে বসে পৌরসভার বিভিন্ন কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পাশাপাশি তিনি দলের সিনিয়র নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন এবং একজন সাবেক এমপির এজেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন। এতে করে দলের নেতাকর্মীরা তার ওপর চরম ক্ষুব্ধ হন। এবারের পৌরসভা নির্বাচনে দল আবারো তাকে মনোনয়ন দিলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়। পৌর আ.লীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এই নির্বাচনে নৌকা মার্কাকে জয়ী করতে দলের পক্ষ থেকে কোনো গাফিলতি ছিল না। গত পাঁচ বছর আগে পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী জয়লাভ করেন। সে সময় রবি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্যায়ভাবে কৌশলে তাকে সরিয়ে মেয়র হিসেবে ক্ষমতায় আসেন। সে কারণে পৌরবাসী তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। এবার অনেক ত্যাগী নেতা দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ছিল, কিন্তু দল তাকে পুনরায় মনোনয়ন দেয়। সে কারণে সুধীসমাজ নৌকাকে নয়, ক্ষোভে রবিকে পরাজিত করেছেন।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া-দুর্গাপুর আসনের এমপি ডা.মনসুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে সৎ জীবনযাপন করে আসছি। আমার সততা দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা দুই বারের সংসদ সদস্যকে সরিয়ে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমার সুনাম নষ্ট করার জন্য রবি এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে। আমি সিনিয়র আইনজীবিদের সঙ্গে পরার্মশ করেছি। আজ তার বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।