জামালপুরে চিকিৎসকদের ধর্মঘট অবশেষে ৪দিন পর প্রত্যাহার করে নিয়েছে। গত বুধবার (৩০ ডিসেম্বর)দুপুরের জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের জরুরি আলোচনা সভায় চিকিৎসকদের ৪ দফা দাবি পযার্য়ক্রমে বাস্তবায়নের আশ্বাসের পর অবশেষে ৪দিন পর,ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ধর্মঘট প্রত্যাহার হওয়ায় জেলার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে পুরোদমে চিকিৎসা সেবা শুরু হয়েছে।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (সাচিব) জামালপুর জেলার আহ্বায়ক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মোশায়ের উল ইসলাম রহমান রতন জানান, অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় চিকিৎসকদের ৪ দফা দাবি পযার্য়ক্রমে বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। তাই আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হবার পর পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। সভায় সভাপত্বি করেন জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মোজাফফর হোসেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, জামালপুর পুলিশ সুপার (এসপি) দেলোয়ার হোসেন বিপিএম,পিপিএম(বার) জামালপুর পৌরসভার মেয়র মীর্জা সাখাওয়াতুল মনিসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা। এ বিষয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. মাহফুজুর রহমান জানান, ধর্মঘট প্রত্যাহার হওয়ায় জেলার সব হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা সচল হয়েছে।
উল্লেখ যে, জামালপুর শহরের ইকবালপুর এলাকার গুরুতর অসুস্থ করিমন (৫৫) নামের এক নারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৫ ডিসেম্বর জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে মারা যান। চিকিৎসকদের চিকিৎসকের দায়িত্ব অবহেলায় ও অক্সিজেন অভাবে রোগির মৃত্যুর অভিযোগ তুলে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে হামলা ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় হামলায় জরুরি বিভাগের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিরঞ্জীব সরকারসহ চারজন ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মাঝে প্রথমে বাকবিতন্ডা পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তারই জের ধরে ওইদিন হাসপাতাল চত্ত্বরে রোগির স্বজনদের সাথে ইন্টার্ন চিকিৎসদের মধ্যে ঘন্টা ব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষের ১০জন গুরুতর আহত হন।পরে জামালপুর সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ সদর উপজেলার ইউএইচএফপিও চিকিৎসক লুৎফর রহমানকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
এ ঘটনায় জামালপুর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক চিকিৎসক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে গত ২৬ ডিসেম্বর রাতে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পাঁচজনের নামে এবং আরও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে রোগির স্বজন শহিদুল ইসলাম (৪২) ও সাইদুর রহমান (৩৮) কে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে সদর থানা পুলিশ।