ধানের জমিতে পলিথিন ও প্লাস্টিক বস্তার বেড়াসহ টিনের ছাউনি দিয়েতৈরি করা হয়েছে ঘুপড়িঘর। দেখে মনে হবে এ যেন যাযাবর বেদে পল্লী। এভাবেই রাতের অন্ধকারে ব্যক্তিমালিকানার ৫৬ শতক জমি জবরদখল করে নিয়েছে প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় থাকা কয়েকব্যক্তি।
গত শনিবার গভীর রাতে নওগাঁর মান্দা উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের কবুলপুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তোজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, প্রভাবশালী একব্যক্তির ইন্ধনে গ্রামের কয়েকব্যক্তি তাদের ভোগদখলীয় সম্পত্তি রাতের অন্ধকারে জবরদখল করে নিয়েছে। ঘটনায় গত রোববার মান্দা থানায় ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী আবদুল বারী জানান, উপজেলার মুশিদপুর গ্রামের মহেন্দ্রনাথ প্রামানিকের সঙ্গে বিনিময় সুত্রে তারা ওই জমির মালিকানা লাভ করেন। কিন্তু কবুলপুর মৌজার সিএস খতিয়ানভূক্ত ১ দশমিক ১১ একর জমির মধ্যে ৫৬ শতক জমি ১৯৭২ সালে কালিপদ ও দেবীপদ রায়ের নামে রেকর্ডভূক্ত হয়। এ কারণে ১৯৯৮ সালে পাওয়ার রেজিস্ট্রির সময় ওই ৫৬ শতক জমি রেজিস্ট্রি করা সম্ভব হয়নি। এনিয়ে নওগাঁ আদালতে রেকর্ড সংশোধনীর একটি মামলা চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৬৪ সালে তারা এদেশে আগমন করেন। এরপর বিনিময় সুত্রে পাওয়া মহেন্দ্রনাথ প্রামানিকের জমিগুলো ভোগদখল করে আসছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই প্রভাবশালী একব্যক্তির ইন্ধনে শনিবার গভীর রাতে খলিশাকুড়ি গ্রামের কাউসার, ইমদাদুল, নজিবুর, মিজানুরসহ ১০ ব্যক্তি ৫৬ শতক ধানী জমি জবরদখল করে নেয়।
তবে দখলকারী মিজানুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলমসহ আরও অনেকে জানান, এটি ইনিমি সম্পত্তি। দীর্ঘ ৫০ বছরেরও অধিক সময় ধরে মশিদপুর গ্রামের আবদুল বারী ও তার পরিবারের লোকজন ভোগদখল করে আসছেন। তাদের কোনো কাগজপত্র নেই। তাই ওই সম্পত্তি আমরা জবরদখল করে নিয়েছি।
মান্দা থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর রহমান জানান, এ-সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাবার পর ঘটনাস্থল তদন্ত করে জবরদখলের সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি জমিজমা সংক্রান্ত হওয়ায় আদালতের স্মরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেখানে যাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে না পারে এ বিষয়ে থানা পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি।