সারা দেশে মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্প-২থর আওতায় গৃহহীনদের জন্য জমি বরাদ্দ ও গৃহ নিমার্ণ কাজ চলছে। ওই প্রকল্পের আওতায় মাসেই লালমনিরহাট জেলায় ৯৭৮টি ভুমি ও গৃহহীন পরিবারকে ২শতক জমি কবুলিয়ত ও বসত বাড়ি নিমার্ণ করে দেয়া হচ্ছে। ৯৭৮টি পরিবারের মধ্যে তিস্তা নদীর তীরবর্তী হাতীবান্ধা উপজেলা ৪২৫টি গৃহহীন পরিবার নতুন বসত বাড়ি পাচ্ছেন।
প্রকল্পের সভাপতি হাতীবান্ধার ইউএনও সামিউল আমিন বলছেন, এ মাসেই গৃহহীন পরিবার গুলো নতুন বসত বাড়ি ও জমির মালিকানার দলিল পাবেন।
জানা গেছে, ২শতাংশ খাস জমির উপর প্রতিটি টিন শেড বিল্ডিং ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১লাখ ৭১হাজার টাকা। ৩৯৪ বর্গফুটের ওই বাড়িতে নির্মাণ করা হচ্ছে দুটি কক্ষ, রান্নার জায়গা ও একটি টয়লেট। হাতীবান্ধা উপজেলায় ৪২৫টি বসত বাড়ির মধ্যে গোতামারী ইউনিয়নে ১০০টি, সিঙ্গিমারী ইউনিয়নে ৩০টি, সিন্দুর্না ইউনিয়নে ৫৬টি, গড্ডিমারী ইউনিয়নে ৫০টি, টংভাঙ্গা ইউনিয়নে ১২টি, বড়খাতা ইউনিয়নে ৩৬টি, ভেলাগুড়ি ইউনিয়নে ৬০টি, ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নে ৬০টি ও পাটিকাপাড়া ইউনিয়নে ২১টি ঘর নিমার্ণ হচ্ছে। ঘর গুলোর কাজ শেষ পযার্য়ে রয়েছে। হাতীবান্ধার ইউএনও সামিউল আমিন ও এসিল্যান্ড শামীমা সুলতানা নিয়মিত নিমার্ণাধীন ঘরগুলো ঘুরে ঘুরে তদারকি করছেন। তাদের এ কাছে সহযোগিতা করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ও উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলীরা।
এ ছাড়া পাটগ্রাম উপজেলায় ১২৩টি, কালীগঞ্জ উপজেলায় ১৫০টি, আদিতমারী উপজেলায় ১৩০টি ও সদর উপজেলায় ১৫০টি গৃহ নিমার্ণ হচ্ছে। তবে পাটগ্রাম উপজেলায় এ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
গড্ডিমারী ইউনিয়নের ভুমি ও গৃহহীন জয়নব বেগম বলেন, আমার স্বামী নেই। দুই মেয়েকে নিয়ে মানুষের বাড়িতে একটা চালা করে আছি। বর্ষাকাল ও শীত কালে থাকতে কষ্ট হয়। হঠাৎ করে খবর পেলাম আমার নামে নাকি পাকা ঘর ও জমি বরাদ্দ হয়েছে। আমার আর বাড়ি নিয়ে চিন্তা নেই।
ওই এলাকার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, তিস্তা নদীর কারণে এ এলাকার অনেক পরিবার প্রতি বছর গৃহহীন হয়ে পড়েন। রাস্তার ধারে অনেকেই চালা করে কষ্টে দিন কাটায় যা দেখে কষ্ট হয়। ওই পরিবার গুলো বসত বাড়ি পাচ্ছে শুনে খুব ভালো লাগছে।
গড্ডিমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবার গুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রী জমি ও বসত বাড়ি নিমার্ণ করে দিচ্ছেন এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। এ কর্মসুচীর আওতায় আমার ইউনিয়নে প্রথম ধাপে ৫০ টি পরিবার বসত বাড়ি পাচ্ছে। আমি আশা করি বাকি ভুমিহীন ও গৃহহীনদের পযার্য়ক্রমে পুর্ণবাসন করে দেয়া হবে।
হাতীবান্ধা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) শামীমা সুলতানা বলেন, সুবিধা ভোগী প্রতিটি পরিবারকে ইতোমধ্যে ২ শতক করে জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জমির মালিকানা কবুলিয়ত নামা বুঝিয়ে দেয়া হবে।
হাতীবান্ধার ইউএনও সামিউল আমিন বলেন, সরকারী সকল নিদের্শনা মেনে বসত বাড়ি গুলো নিমার্ণ করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি এ মাসেই ঘর গুলো গৃহহীনদের উপহার দিতে পাবো।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, প্রথম ধাপে জেলায় ৯৭৮ টি ভুমি ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতক জমি কবুলিয়ত করে ও বসত বাড়ি নিমার্ণ করে দেয়া হচ্ছে। পযার্য়ক্রমে সকল ভুমিহীনদের এ কর্মসুচীর আওতায় নিয়ে আসা হবে।