জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে প্রতিবন্ধী, স্বামী পরিত্যক্তা, অতিশয় বৃদ্ধ, বিধবা, ভিক্ষুক, দুস্থ ২৬২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে 'স্বপ্ননীড়'। বদলে যাবে পার্বতীপুর উপজেলার ২৬২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের ভাগ্য। এসব ২৬২ পরিবারের জন্য পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ, পানি, খেলার মাঠসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে। পুরোদমে সরকারি খাস জমিতে ঘর নির্মাণ কাজ চলছে বিদ্যুৎ গতিতে। অধীর আগ্রহে উপকারভোগীরা সময় পার করছেন কখন তাদের স্বপ্ননীড়ে উঠবে। এদিকে, গত ২৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক -১১ জাজরীন নাহার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য সরকারি খাস জমিতে নির্মিত ২৬২টি বাড়ির নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাশিদ কায়সার রিয়াদের তত্ত্বাবধানে একসাথে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ১৭টি স্থানে ২৬২টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলছে। প্রতিটি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের জন্য থাকছে দুই কক্ষ বিশিষ্ট আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এ ঘর। পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মোঃ হাফিজুল ইসলাম প্রামানিক, উপজেলা প্রকৌশলী আহসান হাবীব, পিআইও, ইউপি চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে একাধিকবার উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভা করা হয়। ইতোপূর্বে জনপ্রতিনিধি, ভূমি ও প্রকল্প অফিসের সমন্বয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের স্থান নির্বাচন করা হয়। ঘরগুলো আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা ভূমি ও গৃহহীনদের দেওয়া হবে। ইউএনও অফিস সূত্রে জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২০২০-২১ অর্থ বছরে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পে ভূমি ও গৃহহীনদের মর্যাদার সাথে বসবাসের লক্ষে সরকারের ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত জমিতে ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বেলাইচন্ডি, মন্মথপুর, রামপুর, পলাশবাড়ী, চন্ডিপুর, মোমিনপুর, মোস্তফাপুর, হাবড়া, হামিদপুর ও হরিরামপুরসহ ১৭টি স্থানে ২৬২ ঘর নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এতে প্রতি পরিবারের জন্য দুই শতক জমি। তার ওপর ২টি রঙ্গিন টিনসহ ইটের ঘর, ২টি প্লেন্ট শীট জানালা, দরজা ও পাকা মেঝে। বারান্দা, রান্না ঘর ও আলাদা স্থানে টয়লেটের ব্যবস্থা রয়েছে। আর এসব প্রতি বাসগৃহে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে।
পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাশিদ কায়সার রিয়াদ বলেন, ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি সম্পন্ন বাসগৃহ নির্মাণ প্রধানমন্ত্রীর অভিনব ও চমকপ্রদ একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি। সরকারের মূল উদ্দেশ্য মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও কোনো মানুষ যেন বাসগৃহ ছাড়া না থাকে। প্রান্তিক বিভিন্ন জনগোষ্টির নিরাপত্তার দেয়ার লক্ষেই গ্রহণ করা হয়েছে এ প্রকল্প। এর পাশাপাশি ‘ক’ শ্রেনির ভূমিহীনদের কবুলীয় দলিল সম্পাদন ও নামজারী কার্যক্রম করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে গৃহ নির্মাণকাজ চলছে। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করে উপকারভোগীদের বুঝে দেয়া হবে মর্মে আশা করা হচ্ছে।