নওগাঁর রাণীনগরে গো-খাদ্যের বাজার দরে হাঁ হাকার পরেছে। করোনাকালেও সরকারী কোন সহায়তা মিলেনি গরু পালনকারীদের ভাগ্যে। ফলে গরু পালনে চরম বিপাকে পরেছেন এলাকার খামারিরা।
রাণীনগর উপজেলা প্রানী সম্পদ অধিদপ্তর সুত্রে জানাগেছে, উপজেলা জুরে ছোট-বড় প্রায় ২ হাজার ৮০৮ টি গরুর খামার রয়েছে। এসব খামারে প্রায় ১লক্ষ ১০ হাজার ৫৭৩টি গরু লালন-পালন করেন খামারীরা। গত বন্যায় রাণীনগর উপজেলাসহ আশে পাশের বিভিন্ন এলাকায় ধান পানিতে ডুবে যাওয়ায় গরুর প্রধান খাদ্য খড়ের চরম সংকট দেখা দেয়। স্থানীয়দের মতে,গত মৌসুমে প্রতি বিঘা (৩৩শতক) জমির খড় রকম ভেদে ৫শ’ থেকে ৮শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু সেই খড় বর্তমানে প্রতি বিঘা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকায়। এ ছাড়া ধান কাটার পর জমিতে অবশিষ্ঠ যে নাড়া থাকে সেই নাড়াও এবার প্রতি বিঘা ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে গরুর প্রধান খাদ্য খড় নিয়ে চরম বিপাকে পরেছেন এলাকার খামারীরা। আবাদপুকুর কুতকুতি তোলা মোড়ের গো-খাদ্য ব্যবসায়ী আল হাজ মোহাম্মদ আলী খাঁন জানান, ভূষি,ব্যান্ড-ময়দা,খৈল এসবেও বস্তা প্রতি প্রায় আগের তুলনায় ২শ’ থেকে আড়াই শ’টাকা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে গো-খাদ্যের দাম বাড়লেও সেই তুলনায় বাজারে গরু বিক্রিতে দাম বাড়েনি। এমন সংকটে করোনাকালে রিক্সা,ভ্যান,পরিবহন চালক, অসহায় দু:স্থ্যদের এবং ফসল উৎপাদনসহ বিভিন্ন খাতে সরকার প্রনোদনা দিলেও মাংস,দুধ উৎপানে এই এলাকায় খামারীদের কোন সরকারী সহায়তা মিলেনি। ফলে সরকারের সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত অনেক খামারীরা লোকসানের কবলে পরে দিশেহারা হয়ে পরেছেন।
কালীগ্রাম বড়িয়া পাড়া গ্রামের খামারী খলিলুর রহমান,আতাইকুলা গ্রামের শাহিনুর রহমান,মিরাটের বীরেন হাওলাদার,ঘোষগ্রামের লোটন হোসেন,ভবানীপুরের হাসান আলীসহ অন্যান্য খামারীরা জানান,এলাকায় গরুর প্রধান খাদ্য খড়ের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা অনেকেই খড় না পেয়ে জমি থেকে নাড়া,পানা বা বাতরাজ কেটে খাওয়াচ্ছি। তারা বলেন,সরকারী ভাবে খাদ্য সহায়তার জন্য তালিকা হয়েছে শুনেছি। কিন্তু করোনাকালীন দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও আশ্বাস ছাড়া ভাগ্যে কোন সহায়তা মেলেনি। চরা দামে খাদ্য কিনে গরু পালনে লোকসান হচ্ছে। তাই খামারীদের টিকে রাখতে সরকারীভাবে খাদ্য সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাণীনগর উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম খাদ্য সংকটের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, করোনাকালীন সময়ে খামারীদের কিছুটা লোকসান পোষাতে ইতোমধ্যে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে তালিকাও করা হয়েছে। কিন্তু এখনো কোন সহায়তা আসেনি। আসা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই সহায়তা খামারীরা পাবেন।