মতিয়ার রহমান মতি। বয়স ৩৭। এরমধ্যে ২৫ বছর ধরেই চা বিক্রি করছেন। তার এই ছোট্র ব্যবসা থেকে উপার্জিত আয়ে চলে স্ত্রী ও তিন সন্তানের সংসার। প্রতিদিন কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত টং দোকানে চা বিক্রি করেন। ব্যবসার কাজে শহরের আসা মানুষ তার দোকানের কাষ্টমার। চা বিক্রেতা বাবার অভাবের সংসারে লেখাপড়া করা হয়নি মতিয়ারের। মাত্র ১২ বছর বয়সে বাবার চায়ের দোকানে কাজ শুরু করে। এর পাঁচ বছর পর পরিবারের সম্মতিতে তাকে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন পরেই আলাদা করে দেয় পরিবার। কাধে এসে পড়ে সংসারের ঘানি। বাধ্য হয়ে আলাদা চায়ের দোকান তৈরি করে শুরু করেন সামান্য ব্যবসা। মতিয়ার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার শ্রীরামপুরের গ্রামের আবদুল ওয়াদদ মন্ডলের ছেলে। তার ছোট্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি কালীগঞ্জ পৌর শহরের কলাহাটা মোড়ে অবস্থিত।
এরপর ধীরে ধীরে সংসারে আসে দুই ছেলে আর এক মেয়ে। এরমধ্যে বড় ছেলে ক্লাস নাইনে পড়ে। মেজ মেয়ে পড়ে ক্লাস সেভেনে আর ছোট ছেলের বয়স মাত্র চার বছর। তিন সন্তান আর স্বামী-স্ত্রীসহ পাঁচজনের সংসারে ভরণ পোষণ হয় এই সামান্য ব্যবসার আয় থেকে। এদিকে সংসারের বাড়তি খরচ যোগাতে গিয়ে স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ঋণ নিতে হয়। ছেলে মেয়ে লেখা পড়া খরচের সাথে প্রতি সপ্তাহে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয় এক হাজার ২০০ টাকা। ফলে সামান্য আয় থেকে প্রতি সপ্তাহে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করে সংসারের খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হয়।
চা বিক্রেতা মতিয়ার রহমান জানায়, আমি খুব অল্প বয়স থেকে চা বিক্রির কাজ করছি। বাকি জীবনও চা বিক্রি করতে চাই। চা বিক্রি করে কোন রকমে বেঁচে থাকলেও আমি খুশি। কিন্তু আমার ঋণের বাড়তি চাপ পিড়া দেয়। কষ্ট করে হলেও আমার সন্তানদের মানুষের মত মানুষ করতে চাই। তাদের যেন আমার মত চা বিক্রি করতে না হয়। দুই ছেলে মেয়েকে স্কুলে পড়াচ্ছি। ছোট ছেলেকে মাদরাসায় পড়াতে চাই।