জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা সমাজসেবা অফিসের আমিনুল ইসলাম নামে এক কর্মচারীকে ঘাড় ধাক্কা দেয়ার ঘটনায় লংঙ্কাকান্ড ঘটেছে বলে জানা গেছে।
ক্ষেতলাল থানা ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকাল ১০টায় ইউনিয়ন সমাজকর্মী আমিনুল ইসলাম যথারীতি নিজ অফিসে এসে দাপ্তরিক কাজ করছিলেন। একপর্যায়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ওই সামজকর্মীর কাছে থাকা ইউনিয়ন প্রকল্প মজুদের ১লক্ষ ৮০হাজার টাকা জমা দিতে বলেন। এতে ওই সমাজকর্মী বিব্রত হয় এবং প্রকল্প মজুদের অর্থ জমাদিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এজন্য তিনি কিছু সময় চান। কিন্তুু সমাজসেবা কর্মকর্তা সময় না দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সমুদয় টাকা জমা দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এনিয়ে ওই কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে সমাজসেবা কর্মকর্তা ওই কর্মচারীকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন। উপায় না দেখে আমিনুল ইসলাম বিষয়টি সাথে সাথে ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ করতে যান। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান ঢাকায় এবং নির্বাহী কর্মকর্তা জয়পুরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অবস্থান করায় তা সম্ভব হয়নি। নিরুপায় হয়ে বিষয়টি তিনি বাংলাদেশ সমাজসেবা কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষকে জানান এবং তাদেরই পরামর্শে ক্ষেতলাল থানার ওসিকে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানান। এ ঘনটার প্রায় এক ঘন্টার মধ্যে সমাজসেবা কর্মচারী এসোসিয়েশনের ১০-১২ জনের একটি দল ক্ষেতলাল সমাজসেবা অফিসে পৌঁছে। অ্যাসোসিয়েশনের ওই দলকে দেখা মাত্রই উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা দৌড়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে আশ্রয় নেন। অ্যাসোসিয়েশনের লোকজনও ওই কর্মকর্তার পিছে পিছে দৌড় দেন। এ সময় উপজেলা পরিষদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচাীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে ক্ষেতলাল থানা পুলিশ খরব পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ইউনিয়ন সমাজকর্মী আমিনুল ইসলাম জানান, প্রকল্প মজুদের টাকা জমা দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে,শার্টের কলার টেনে লাঞ্ছিত করেন। এতে তিনি অপমানিতবোধ করেন এবং এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সমাজসেবা কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন এর উপ-মহাসচিব গাওছুল আজম জানান, তারা কোন বিশৃঙ্খলার জন্য নয় বরং বিষয়টি সমাধানের জন্য এসেছিলেন।
কর্মচারীকে লাঞ্ছিত করার কথা অস্বীকার করে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, তিনি বিধি মোতাবেক প্রকল্প মজুদের টাকা তাকে জমা দিতে বলেছেন মাত্র। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে উল্টো অ্যাসোসিয়েশনের লোকজনদের ডেকে এনে তিনি তাকেই লাঞ্ছিত করেছেন।
ক্ষেতলাল থানার অফিসার্স ইনচার্জ নিরেন্দ্র নাথ মন্ডল জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ,এফ,এম আবু সুফিয়ান জানান, বিষয়টি তাদের নিজস্ব দাপ্তরিক ব্যাপার। এ ঘটনায় কার্মকর্তাদের ভাবমুর্তি নষ্ট হয়েছে। তা সত্ত্বেও বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিষয়টি সমাধানে জেলা সমাজসেবার উপ-পরিচালক ইমাম হাশেমী সাথে উভয় পক্ষের বৈঠক চলছিল।