পিরোজপুরের নাজিরপুরে স্কুল শিক্ষক সমীরন মজুমদার (৩০) হত্যা মামলায় ৩ জনকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার ১২ জানুয়ারী বিকাল সাড়ে ৩টায় জেলা দায়রা জজ মোহা: মহিদুজ্জামান-এর আদালত এ রায় প্রদান করেন। এতে উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম বানিয়ারী গ্রামের চিত্তরঞ্জন রায়ের ছেলে দিপংকর রায় (৩০), একই গ্রামের মৃত দ্বিন মোহাম্মাদ শেখের ছেলে নুর ইসলাম ওরফে নুরু শেখ (৩০) ও বজলুর রহমান শেখের ছেলে খোকন শেখ (২৪) এ ৩ জনকে মৃত্যু দন্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একই সাথে প্রত্যেককে আরো এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ প্রদান করা হয়। এ ছাড়া নিহত সমীরন মজুমদারের স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগে ওই ৩ জনের প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদ- ও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ প্রদান করা হয়। এ সময় মামলার প্রধান আসামি ও মৃতদন্ড প্রাপ্ত দিপংকর রায় ছাড়া সকলেই উপস্থিত ছিলেন। এ মামলার অন্য ৫ আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ রাত ২টার দিকে উপজেলার ৯নং পশ্চিম বানিয়ারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সমীরন মজুমদারকে নিজ বাড়ির ঘরের সিঁদ কেটে ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় নিহত সমীরনের স্ত্রী তার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার সাথে জড়িতদের বাঁধা দিলে হত্যাকারীরা তাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে আহত করে। ঘটনায় তার স্ত্রী স্বপ্না বসু বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় থানা পুলিশ ওই হত্যা কা›েডর সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক দিপংকর রায় ও মো. খোকন শেখ এ দু’জকে গ্রেফতার করেন। পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী একই বছর ২৮ ডিসেম্বর ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মুজিবুর রহমান তদন্ত করে নুরুল ইসলাম শেখ, নাঈম শেখ, শাহজামাল ওরফে জামাল শেখ, সুমন শেখ, মিজু হাওলাদার, আতিয়ার শেখ এ ৮ জনের নামে চার্জসিট দাখিল করেন। মামলাটি পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজের আদালতে বিচারাধীন ছিলো। কিন্তু ওই বিচারক না থাকায় দীর্ঘ শুনানী শেষে জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহা: মহিদুজ্জামান এ রায় প্রদান করেন। মমালায় সরকারী পক্ষে আইনজীবী পিপি খান মো. আলাউদ্দিন এ মামলাটি পরিচালনা করেন। আর আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওবায়দুল কবির বাদল ও মো. দেলোয়ার হোসেন। নিহত সমীরন মজুমদারের মা নিহার কণা মজুমদার এ রায় ঘোষনার পর ছেলে হত্যার কথা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন, আমি রায়ে সন্তুষ্ট তবে এ হত্যার সাথে আরো কেহ জড়িত থাকলে সৃষ্টি কর্তা তাদের বিচার করবেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওবায়দুল কবির বাদল জানান, তারা ন্যায় বিচার পেতে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।