জীবণ যেন এক ছুটে চলা নদী। যেন এক প্রবাহমান জলধারা। জীবণ যেন ছুটে চলে জীবণের নিয়মে। নদী যেমন সামনের সকল বাঁধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে ছুটে চলে গন্তব্যে, তেমনি সমাজের দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষ প্রাকৃতিক সকল বাঁধা ডিঙিয়ে এগিয়ে যায় কর্মের সন্ধানে।
গত কয়েকদিন ধরেই নওগাঁর পত্নীতলাসহ আশে পাশের উপজেলায় দেখা দিয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। উত্তরের হীমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় জবুথবু হয়ে গেছে মানুষ। বিশেষ করে খেটে খাওয়া কৃষি মজুররা চরম বেকায়দায় পড়েছে। মঙ্গলবার দিনভর কুয়াশাচ্ছন্ন ছিলো পুরো উপজেলা। খোলা ফসলের মাঠে খালি পায়ে কাদা-পানির মধ্যে বোরো ধান রোপণ করতে গিয়ে তাঁরা চরম কষ্টের মুখোমুখি হচ্ছেন। পরিবারের সদস্যদের মুখে দু-মুঠো খাবার তুলে দেওয়ার জন্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কৃষি মজুররা তীব্র শীতকে বরণ করে নিয়ে মাঠে বোরো রোপণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সরেজমিনে উপজেলার কাঞ্চন, পত্নীতলা, ফহিমপুর, পার্বতীপুর, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে কৃষক ও মজুররা কেউ জমিতে পানি দেওয়া, কেউ কলের লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ, কেউ বীজতলা হতে চারা সংগ্রহ আবার কেউ জমিতে বোরোর চারা রোপণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বিষয়ে ডোহানগর গ্রামের কৃষক হামিদুর জানান, আমন মৌসুমে ধানের ভালো দাম পাওয়ায় উৎসাহ নিয়েই আমরা বোরো আবাদে মাঠে নেমেছি। ভালো ফলনের আসায় বৈরী আবহাওয়া মাথায় নিয়েই বোরোর চারা নির্ধারিত সময়ে লাগানোর চেষ্টা করছি। চলতি বছরে আমি ৫বিঘা জমিতে নিজে বোরো লাগাবো। ছোট চাঁদপুর গ্রামে বীজতলা হতে ধানের চারা তোলার সময় কথা হয় কয়েকজন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীর সাথে। তাঁরা বলেন, শীতের জন্যতো আর পেট মানবে না। কাজে না করলে খাবো কি। আমন ধান কাঁটার পর প্রায় ২মাস সময় বেকার থাকতে হয়েছে। এ সময় ধার দেনা হয়ে গেছে। তাই প্রচন্ড শীতে কষ্ট হলেও উপায় নেই। কাজ করতেই হচ্ছে।
চলতি বোরো মৌসুমে পত্নীতলায় ২০হাজার ৪শত ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।