প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসাবে বাড়ি পাচ্ছেন শেরপুরের ২৯১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। জেলার পাঁচ উপজেলার ভূমিহীনরা ওইসব নতুন বাড়ি পাবেন। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের মাঝে বাড়ি ও জমির দলিল হস্তান্তর করবেন।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি ) দুপুরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষ রজনীগন্ধায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে নতুন বাড়ি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে দেয়া হচ্ছে। জেলার সদর উপজেলাসহ নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদীর এই পাঁচ উপজেলার প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, রিকশাচালক, দিনমজুর, বিধবা, কাজের মহিলাসহ ২৯১টি গৃহহীন পরিবার পাচ্ছেন জমিসহ সেমি পাকা বাড়ি।
উপকারভোগীরা পাবেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দুই শতাংশ জমির মালিকানা। সেই সাথে নির্দিষ্ট ডিজাইন ও সুদৃশ্য রঙিন টিনশেডের দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি। বাড়ি নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে ২০৭টি বাড়ির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর নির্মাণ কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক এটিএম জিয়াউল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তোফায়েল আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ওয়ালীউল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুক্তাদিরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, ওইসব বাড়ির নির্মাণকাজ সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে সার্বক্ষণিক তদারকি করেছেন স্বস্ব উপজেলার ইউএনও, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ভূমি অফিসের কর্মকর্তা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সকল সদস্য। তাছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ নিয়মিত কাজের খোঁজ-খবর রেখেছেন।
নকলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রতিটি বাড়ি নির্মাণবাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। এ ছাড়া প্রতিটি বাড়ির মালামাল পরিবহনের জন্য অতিরিক্ত আরো ৪ হাজার টাকা করে ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রতিটি বাড়িতে থাকছে দুটো শোবার ঘর, একটি রান্না ঘর, একটি ইউটিলিটি রুম, একটি টয়লেট ও একটি বারান্দা।
নকলার ইউএনও জাহিদুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নির্দেশনা পাওয়ার পর ভূমিহীন পরিবারের জন্য গৃহনির্মাণের কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এরপরও যদি ভূমিহীন ও গৃহহীন কোনো পরিবার খোঁজে পাওয়া যায় তাদেরকেও এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে এবং চলতি মুজিব জন্মশতবর্ষেই তা বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি জানান, সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, এলাকার সুশীলজনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা জমা নেয়া হয়। পরবর্তীতে সেই তালিকা মোতাবেক সরেজমিনে পরিদর্শন ও তদন্ত পূর্বক প্রাপ্য পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের জন্য নির্ধারণ করা হয়। পরে সুবিধাভোগীর তালিকা চুড়ান্ত করে যথাযথ দপ্তরে পাঠানো হয়। পরে অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এরইমধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে, চলছে রং করার কাজ। শুক্রবার সকল বাড়ির রংয়ের কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে গৃহহীন ও ভূমিহীন ৮ লাখ ৮২ হাজার ৩৩ পরিবারকে আধা পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে মালামাল পরিবহণসহ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করে। সে হিসেব অনুযায়ী গৃহহীনদের জন্য বাড়ি নির্মাণে মোট ব্যয় হচ্ছে ১৫ হাজার ৪৩৫ কোটি ৫৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।