“মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার - দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ প্রদান” প্রকল্পের আওতায় বাগেরহাটের মোল্লাহাটে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ৩৫টি গৃহ প্রদান করা হয়েছে। শনিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সারাদেরশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের গৃহ প্রদান আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর ৩৫ টি পরিবারের মাঝে এ গৃহ প্রদান করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ গৃহ প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ও গৃহ প্রদান/হস্তান্তর করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাফ্ফারা তাসনীন, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম রেজা ও রুবিয়া বেগম, অধ্যক্ষ এল জাকির হোসেন, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস, উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ শওকত হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মফিজুর রহমান সজল, ইউপি চেয়ারম্যান সিকদার উজির আলী, মুন্সি তানজিল হোসেন, শেখ রফিকুল ইসলাম ও বাবলু মোল্লা, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্বাস, প্রেসক্লাব মোল্লাহাটের সাধারন সম্পাদক এম এম মফিজুর রহমান ও যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহিনুর ইসলাম শাহিন, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অবঃ অধ্যক্ষ মাওঃ মোঃ আসগর আলী প্রমূখ।
উল্লেখ্য, উপজেলার গাংনী ইউনিয়নের চর-দারিয়ালা এলাকায় সদ্য পুনঃখননকৃত আঠারোবাকী নদীর পাড়ে অত্যন্ত নয়নাভিরাম পরিবেশে এ গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। সারিবদ্ধ ৩৫টি গৃহ নির্মাণ করায় অত্র এলাকার রূপ বদলে গেছে। দেখলে মনে হয় যেন উন্নত স্বপ্নপুরীসম কোন এক ছোট শহর। এ স্বপ্নপুরীর বাসিন্দা হয়েছেন ভূমিহীন ও গৃহহীন ৩৫টি পরিবার। সৌন্দর্যমন্ডিত এ সকল গৃহের কারণে যেমন বদলে গেছে পূর্বেকার কদাচিত রূপ। তেমনি ভাগ্য বদলের কারণে অত্যন্ত খুশি এর সুফলভোগি ও এলাকাবাসী।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এ ঘরে সারাজীবন কাটাবেন ভূমিহীন ও গৃহহীনরা। যারা আগে অন্যের জমিতে, কেউবা কারো বাড়ির এক কোণে, আবার কেউ রাস্তার পাশে ঝুপড়ী ঘরে সমাজের বোঝা হয়ে অভিশপ্ত জীবন কাটাতেন। তারা আজ প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার গৃহ পেয়ে আনন্দে আতœহারা।
গৃহ পাচ্ছেন এমন এক সুফলভোগী দ্বিন মোহাম্মাদ ফকির বলেন, তিনি তার পরিবারের সকলকে নিয়ে কাউন্সিলে (ইউনিয়ন পরিষদে) থাকতেন। তিনি নিজের নামে বাড়ি পেয়ে অত্যন্ত খুশি। আরেক উপকারভোগী স্বরূপজান বলেন, আমাদের কোন যায়গা-ঠাই নাই, পরের জমিতে থাকতাম, ৫/৬ডা ছায়াল-মাইয়া নিয়ে পথে-ঘটে থাহ্যে ব্যাড়াইছি, আমি এ বাড়ি পাইয়্যে খুশি অইছি, বঙ্গকন্ধু আর প্রধান মন্ত্রীর জন্যে দোয়া করি। হাসিনা যেন ম্যালা দিন বাচ্যে থাহে। আরো কয়েক উপকারভোগীর সাথে কথা হলে তারাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ূ কামনাসহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আতœার শান্তি কামনা করেন।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সিকদার উজির আলী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার ৩৫ গৃহ পেয়ে যেমন খুশি হযেছে উপকারভোগীরা, তেমন খুশি আমার এলাকাবাসীসহ আমি। আমরা সকলে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মফিজুর রহমান সজল বলেন, ভূমিহীন ও গৃহহীন প্রতি পরিবারকে ২শতাংশ জমিসহ ১লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যায়ে ২বেড, একটি করে কিচেন ও বাথরুম এবং একটি বারান্দা বিশিষ্ট টিনশেড পাকা ঘর তৈরী করে দেয়া হয়েছে। এখানে বিদ্যুৎ, খেলার মাঠ, রাস্তা ও ডিপ-টিউবওয়েলসহ আরো কিছু জরুরী কার্যক্রম শেখ হেলাল উদ্দীন এমপি’র ব্যক্তিগত সহযোগিতায় করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাফ্ফারা তাসনীন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুজিববর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের গৃহ প্রদান কার্যক্রমে তিনিসহ সংশ্লিষ্ট সকলে অত্যন্ত আন্তরিক থাকায় এমন চমৎকার একটি পল্লী বা আবাসন সম্পন্ন হয়েছে। আজ (শনিবার) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ উপহার গৃহ উপকারভোগীদের মাঝে প্রদান উদ্বোধন করেন। একই সাথে মোল্লাহাটের ৩৫টি পরিবারের মাঝে এ উপহার গৃহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুল আলম ছানা বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার গরীব-দুঃখী মানুষের উন্নয়ন করে। তারই ধারাবাহিকতায় মুজিববর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের গৃহ উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। জননেতা শেখ হেলাল উদ্দীন এমপি’র সহযোগীতায় মোল্লাহাটেও প্রধানমন্ত্রীর উপহার ৩৫টি টিনশেড পাকা ঘর করা হয়। যা, আজ উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।