রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণে অধিগ্রহনকৃত জমির টাকা ৩ বছরেও পায়নি ক্ষতিগ্রস্থরা। টাকা না পাওয়ায় জমির মালিকরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে কাজে বাঁধা দিচ্ছেন। ফলে সরকারের মেগা প্রকল্পের ওই সড়কটির কাজেও গতি আসছে না। ধীরগতিতে চলছে এটির নির্মানকাজ। ক্ষতিপুরন পেতে রংপুর জেলা প্রশাসনের ভুমি অধিগ্রহন শাখায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারন মানুষ। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) উল্লিখিত মহাসড়কটি সাউথ এশিয়ান সাবরিজিওনাল ইকোনোমিক কর্পোরেশন-২ (সাসেক-২) প্রজেক্টের অধীনে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুরের মডার্ন পর্যন্ত ১৯০ কিমি সড়ককে ৬ লেনে উন্নীতকরণে জমি অধিগ্রহন করে ৪ লেনের কাজ চলছে। চায়নার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিএসসিইসি-৭ কে ৩ বছর মেয়াদে গাইবান্ধার মোকামতলা থেকে রংপুর মডার্ন পর্যন্ত ১’শ কিমি সড়ক নির্মানের জন্য দায়িত্ব পায়। এরমধ্যে রংপুর অংশে ৫৩ কি.মি রয়েছে। ২০১৮ সালে মহাসড়ক সংলগ্ন পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর, মাদারপুর, শায়েস্তাপুর ও জামদানী গ্রামে জমি অধিগ্রহন প্রক্রিয়া শুরু হয়। জমি কম মুল্য এবং অবকাঠামোর মুল্য পুনঃনির্ধারনের দাবিতে ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বরে ওই এলাকার শত শত নারী-পুরুষ মাদারপুরে মহাসড়ক অবরোধ, মানববন্ধন শেষে ইউএনও’র কাছে স্মারকলিপি দেয়। কিন্তু কাজেরকাজ কিছুই হয়নি। গ্রাম ৪ টির ২১২ টি পরিবারের ১৫ একর জমি অধিগ্রহন করে বাড়ীঘরসহ আবাসন ভেঙ্গেও দেয়া হলেও ক্ষতিপুরনের চেক দেয়া হয়নি। অধিগ্রহনের চেয়ে অতিরিক্ত জমি এবং জমির শ্রেনী পরিবর্তন নিয়েও ভুমি অধিগ্রহন শাখা অন্যায় করছে বলে সংশ্লিষ্টদের দুষছেন ভুক্তভোগীরা। অপরদিকে বছরের পর বছর ধরে অধিগ্রহন শাখায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা। অধিগ্রহন শাখার এলএ কেস নং- ২/২০১৮-২০১৯ এর মুলে মাদারপুর মৌজায় প্রায় ৯ একর, সয়েকপুরে প্রায় সাড়ে ৩ একর, জগন্নাথপুরে প্রায় ১ একর ও শায়েস্তাপুরে ৬৫ শতক অধিগ্রহন করা হয়েছে। সরেজমিনে ওই এলাকায় গেলে সয়েকপুরের আনিছার রহমান, মাদারপুরের আবুল কাশেম, জগন্নাথপুরের রাজিয়া বেগম, শায়েস্তাপুরের আইয়ুব আলী বলেন, আমাদের এলাকার পরে অন্য এলাকায় জমি অধিগ্রহনের টাকা দেয়া হয়েছে। আর আমাদের ফাইলপত্র খুঁজে পাচ্ছে না। তারা আরও জানায়, পুর্বের পরিমাপের পরে অতিরিক্ত জমিও নেয়া হয়েছে। ক্ষতিপুরন না পাওয়ায় প্রায় দিনই ঠিকাদারের লোকজনকে আটকে রাখছেন এলাকাবাসী। গত ২৩ জানুয়ারী চন্ডীপুরে চায়নার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ওবায়েদ হোসেনসহ কয়েকজনকে ক্ষতিগ্রস্থরা আটকে রাখলে পীরগঞ্জ থানার পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে। মহাসড়কে নিয়োগকৃত চায়নার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সৌরভ ঘোষ বলেন, জমি অধিগ্রহনে দীর্ঘসুত্রিতার কারণে আমাদের কাজের গতি কমে গেছে। আর জমির টাকা না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থরা প্রতিদিনই আমাদেরকে কাজে বাঁধা দিচ্ছেন। অথচ জমি অধিগ্রহনের সম্পূর্ন টাকা সওজ থেকে জেলা প্রশাসনের অধিগ্রহন শাখায় দেয়া হয়েছে। রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, অধিগ্রহন শাখায় ফাইল হারানোর কথা শুনে রেজিষ্ট্রার করে দিয়েছি। আর অধিগ্রহন প্রক্রিয়ায় অনেকের জমি থাকায় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দেরি হচ্ছে। মানুষ যাতে ক্ষতিপুরনের চেক দ্রুত পায় সে জন্য নির্দেশ দিয়েছি।