নোয়াখালী সমবায় সমিতির নির্বাচন ভিত্তিক পরিচালনা কমিটি গঠনের জোরালো দাবী উঠেছে। ওই সমিতির সাধারণ সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবত এই দাবী জানিয়ে আসলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বহুবার নানা জায়গায় বৈঠক হয়েছে। কমিটিতে স্থান পেতে অনেকেই প্রশাসনের নিকট দৌড়ঝাঁপ করেছেন। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে অবৈধ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এতে করে বর্তমানে সমিতির সাধারণ সদস্যদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। সাবেক জেলা প্রশাসক যিনি ডিসি হাসান নামে হালিশহরে পরিচিত। তিনি গোপনে কয়েক বার কমিটি করে পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এতে সমিতির বেশিরভাগ সদস্যই নাখোশ হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সবাই চাইছেন নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে স্বচ্ছ একটি কমিটি। সেই কমিটি কখন হবে; এখনো তা সদস্যদের অজানা। অপরদিকে, এবার সমিতির পাল্টা পাল্টি কমিটি নিয়ে মুখ খুললেন সমিতির নেতৃবৃন্দরাও। এতে সবার প্রত্যশা সকলের অংশগ্রহণ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন। বন্দর নগরী সমবায় সমিতির দ্বিতীয় মেয়াদে ৩ বছরের জন্য সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিন। তিনি বর্তমানে নোয়াখালী সমিতির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করছেন। ওই সমিতির পাল্টা পাল্টি কমিটিতে তিনি নিজেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকার শীর্ষ অনলাইন নিউজ এজেন্সি এফএনএস টুয়েন্টিফোর ডটকম এর এই প্রতিনিধিকে এক সাক্ষাতকারে সাহাব উদ্দিন জানান, নোয়াখালী সমিতি একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। এর সুনাম বহুদিনের। এখানে সবার সুখ-দু:খ জড়িত। সবার হৃদয়ের স্পন্দন। কিন্তু এখন কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকায় এবং নির্বাচন না হওয়ায় সমিতির অনেক দিন অফিস বন্ধ রয়েছে। জনহিতকর কাজ গুলো স্থবির। এতে সদস্য কিংবা কমিটির নেতৃবৃন্দরা একে অপরের বিরুদ্ধে সমালোচনায় ব্যস্ত রয়েছেন। এতে সমিতির সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। এই অবস্থা আর চলতে দেওয়া যায়না। সাহাব উদ্দিন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, এই সমস্যা নোয়াখালীবাসীর মনে দারুণভাবে আঘাত করেছে। নোয়াখালীর মানুষ দেশ-বিদেশে রাজনীতি, প্রশাসনিক কিংবা ব্যবসা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র সমিতিতে পদবী পাওয়ার জন্য নোংরা খেলা কখনো কেউ মেনে নিবেন না। এজন্য সমিতির দ্রুত নির্বাচন ভিত্তিক কমিটি গঠনের দাবী জানাচ্ছি। নির্বাচন হলে নির্ধারিত হবে; কার গ্রহণ যোগ্যতা কতটুকু আছে। সৎ ও যোগ্যরা নির্বাচন নিয়ে কখনো বিরোধিতা করবেন না। আমি মনে করি মানুষের কল্যাণ কামনা করলে সমিতির বাইরে থেকেও কাজ করা যায়। পদবী দরকার কি? অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, নিন্দনীয় লবিং-গ্রুপিং করে পকেট কমিটি গঠন করা কারও জন্য মঙ্গল নয়। একে অপরের শান্তি প্রত্যাশা করলে অবশ্যই উদার মন মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে। কারও মনে আঘাত দিয়ে কিছু অর্জন করা মোটেও কামনা করিনা।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে ব্যবসায়ী মহলে ব্যাপক পরিচিত মুখ এই সাহাব উদ্দিন বর্তমানে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, চট্টগ্রামস্থ সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সেনবাগ উপজেলা সমিতির সহ-সভাপতি, সেনবাগ উপজেলা পেশাজীবি পরিষদের উপদেষ্টাসহ বেশকিছু সামাজিক এবং ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপুর্ণ পদে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে একসময় তিনি নোয়াখালী সমিতির অর্থ সম্পাদক, নোয়াখালী জেলা কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সেনবাগ উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। এছাড়াও সেনবাগ উপজেলা ছাত্রলীগের গুরুত্বপুর্ণ পদে থেকে দলের জন্য আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, নোয়াখালী সমিতির সদস্যদের বৃহৎ অংশ একবাক্যে নির্বাচন চাইছেন। কারণ; এতে যোগ্যরা নেতৃত্ব দিতে পারবেন।