নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পেড়লী বাজার সোনালী ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার আশিষ দাশের বিরুদ্ধে ঋণ জ¦ালিয়াতির মাধ্যমে অর্ধ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওায়া গেছে। ওই ঘটনায় পেড়লী গ্রামের মৃত সাহাদত শেখের ছেলে গোলাম মোর্শেদ ২১ জানুয়ারী খুলনার জিএমসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, গোলাম মের্শেদ বিগত ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর ওই সোনালী ব্যাংকের শাখা থেকে ৪৯ হাজার টাকা কৃষি ঋণ গ্রহন করেন এবং ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল তিনি ওই ঋণের টাকা পরিশোধ করে ওইদিনই (১৩ এপ্রিল) তিনি একই ব্যাংক থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ গ্রহন করেন। এরপর ওই বছরই তিনি একই ব্যাংক থেকে ৭ লাখ টাকা এসএমই ঋণ গ্রহণ করে ২১ জুলাই ওই ঋণের টাকা উত্তোলনের জন্য চেক জমা প্রদান করলে ক্যাশ কাউন্টারে তার চেক আটকে দিয়ে ক্যাশ স্থগিত করেন। এর কারণ জানতে চাইলে তৎকালীন ম্যানেজার আশিষ দাশ তাকে জানান ‘একই ব্যাংক থেকে একই ব্যক্তির নামে একাধিক ঋণ প্রদান করার নিয়ম নেই। আপনার নামে পূর্বে গৃহিত ১ লাখ টাকার ঋণ পরিশোধ করে এসএমই ঋণের টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।’ গোলাম মোর্শেদ অগত্যা পূর্বে নেয়া ঋণের ১ লাখ টাকা ওইদিনই পরিশোধ করে এসএমই ঋণের টাকা উত্তোলন করেন। এ ঘটনার প্রায় চার বছর পর গত বছর জুলাই মাসে গোলাম মোর্শেদ তার এসএমই ঋণটি নবায়নের জন্যে সোনালী ব্যাংক পেড়লী বাজার শাখায় গেলে বর্তামান ম্যানেজার মুক্তিকামি বিশ্বাস তাকে জানান, ‘২০১৬ সালে এসএমই ঋণ নেয়ার ৩ দিনপর ২৪ জুলাই তার নামে ওই ব্যাংকে ৪৯ হাজার টাকার একটি ঋণ আছে।’
একথা শুনে গোলাম মোর্শেদ বর্তমান ম্যানেজার জানান, ‘এসএমই ঋণ নেয়ার পর আমি আর কোন ঋণ নেননি।’ অথচ আমার উপর ৪৯ হাজার টাকা ঋণ গহণের মিথ্যা দায় চাপানো হচ্ছে।’ তিনি আরো জানান, ‘ আমি ৭ লক্ষ টাকার একজন এসএমই ঋণ গ্রহিতা হলেও সরকার ঘোষিত ঋণের ওপর দেয়া প্রণোদনার টাকা তাকে দেয়া হয়নি। বরং একাধিকবার ঋণ নেয়ার সুযোগে তার পূরনো কাগজপত্রে স্বাক্ষর দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে তার নামে ঋণ তুলে তৎকালীন ম্যানেজার আশিষ দাশসহ তার সহযোগীরা ৪৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে এর দায় আমার উপর চাপানো হয়েছে। জালিয়াতির মাধ্যমে আমার নামে ঋণের টাকা আত্মসাৎকারী অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তার বিচারসহ আমি ওই মিথ্যা ঋণের দায় থেকে অব্যহতি চাই।’
সোনালী ব্যাংক পেড়লী বাজার শাখার সাবেক ম্যানেজার ও বর্তমানে নড়াইল আঞ্চলিক অফিসের প্রিন্সিপ্যাল কর্মকর্তা আশিষ দাশ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘অনেক দিনের ব্যাপার, তাই কাগজপত্র দেখলেই সব বোঝা যাবে। ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতির কোন সুযোগ নেই।’
পেড়লী বাজার শাখার বর্তামান ম্যানেজার মুক্তিকামি বিশ্বাস বলেন, ‘২০১৬ সালের ২৪ জুলাই গোলাম মোর্শেদের নামে ব্যাংকে ৪৯ হাজার টাকার একটি ঋণ আছে। কিন্তু কাগজপত্র নিচে পড়ে থাকার কারণে এতদিন বিষয়টি তাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি।’’