শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভারত সীমান্ত ঘেঁষা খলচান্দা এলাকার কোচপল্লীতে গত কয়েক দিন ধরে বন্যহাতির তান্ডব শুরু হয়েছে। পাহাড়াী ঢাল গুলিতে আবাদ করা কৃষকের রোপা আমন ধানের চারা ক্ষেতে লোকালয়ে নেমে আসছে ওই বন্য হাতির দল। এতে করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে পাহাড়ী এলাকায় বসবাসরত মানুষের মাঝে।
আতংকগ্রস্থ গ্রামবাসী ১১১২ নং ভারত সীমান্ত পিলার ডালুকোনা-খলচান্দা এলাকা থেকে ১১১৩ নং সীমান্ত পিলার সমেশ্চুড়া এলাকার দিকে ওই বন্যহাতির দলকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। গ্রামবাসী বলেছেন রাতের যে কোন সময় লোকালয়ে তান্ডব চালাতে পারে ওই বন্যহাতির দল।
প্রত্যক্ষদর্শী দুঃশাসন কোচ ও নির্মল কোচ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই বন্য হাতিরদল এখানে এসেছে। তাদের বাড়ির উত্তর পুর্ব দিকের ডালুকোনা পাহাড়ে গরু চড়াতে যান। বেলা ১২টার দিকে তারা হঠাৎ বন্যহাতির উপস্থিতি টের পান। এ সময় হাতি তাড়ানোর জন্য তারা খলচান্দা এলাকার কোচ পল্লীতে খবর পাঠান। পরে বিকেলে গ্রামবাসী মিলে হাতাতালি, হৈ-হোল্লোর, চিৎকার-চেচামেচি ও হ্যান্ড মাইকের সাহায্যে শব্দ করে পশ্চিমের সমেশ্চুড়া গ্রামের পাহাড়ের দিকে তাড়িয়ে দেন। এখন ওই বন্যহাতির পালটি গলাচিপা নামক পাহাড়ের গহিন জঙ্গলে অবস্থান করছে। বন্যহাতির এই দলটি যে কোন সময় খলচান্দ গ্রামসহ আশপাশের বাড়ি গুলোতে তান্ডব চালাতে পারে বলে ওই গ্রামের বাসিন্দা পরিমল কোচ ও পরমেশ্বর কোচ জানান।
তারা আরো জানান, ২০০১ সালের দিকে পাহাড়ী এলাকায় বন্যহাতি তান্ডব শুরু করে। প্রায় ২০ বছর অতিবাহিত হলেও সীমীত ভাবে কিছু কর্মসূচি সেমিনার ছাড়া সরকারীভাবে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। যদিও মাঝে মধ্যে হাতি তাড়ানোর জন্য ডিজেল ও লাইট বিতরণ করা হয়েছে। এগুলো পর্যাপ্ত নয় বলে উল্লেখ করে তারা বলেন, ঘর-বাড়ি ও রেপা আমন ফসল বাঁচাতে বন্যহাতির আতংকগ্রস্থ এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে ডিজেল ও জগ লাইট বিতরণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। কারণ এখন বন্যহাতির পাল আলো ছাড়া অন্য কোন কিছুতে তেমন ভয় পায় না।
এ ব্যাপারে বন বিভাগের মধুটিলা ফরেষ্ট রেঞ্জের কর্মকর্তা মো. আবদুল করিম বলেন, বন্যহাতির আক্রমণ থেকে জান মাল বাঁচাতে আমরা সচেতন আছি। এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণকে হাতির আক্রমণ ঠেকাতে বন্যহাতির দলকে উত্ত্যক্ত না করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।