আবদুল হালিম। শুধু একটি নাম নয়। একটি ইতিহাসও বটে। তিনি ছিলেন গর্বিত একজন দেশ প্রেমিক। ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে পথ চলেছেন। ১৯৬৫ সালে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে ছাত্রলীগের প্যানেলে ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। দেশ ও দলের লড়াই সংগ্রামের অগ্রভাগেই ছিল তার গর্জন। পিতা মাতা স্ত্রী সন্তানের মায়া ত্যাগ করে মাতৃভূমির টানে চলে গিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। শুধু যুদ্ধই করেননি। তিনি ছিলেন ৭১’র রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একজন দক্ষ সংগঠকও। জাতির জনককে হত্যার পর গোটা দেশ যখন স্তদ্ধ। জীবনের মায়া ছেড়ে রাজপথে প্রকাশ্যে ওই প্রতিবাদ করে পড়েছিলেন তৎকালীন প্রশাসনের রোষানলে। পিছু হটেননি আবদুল হালিম। তার প্রতিবাদ থামেনি। চাইলে জীবনে বড় কিছু হতে পারতেন। রাজনীতি ও নিজ জন্ম ভূমির টানে সরাইল ছেড়ে কোথাও যাননি। সারা জীবন সাধারণ মানুষের জন্যই কাজ করেছেন। দল তাকে যথেষ্ট মূল্যায়ন করেছেন। দুই মহান জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে ওঁনাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। দূর্ভাগ্য তিনি জয়লাভ করতে পারেননি। নির্লোভ সহজ সরল এ মানুষটি সাদামাটা জীবনযাপন করেছেন। তিনি ছিলেন দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের হালিম ভাই। ছোট বড় জটিল কূটিল সকল ঘটনাই নিমেষে শেষ করেছেন তিনি। ওঁর মৃত্যুতে সরাইল হারিয়েছে একজন গর্বিত দেশ প্রেমিককে। আবদুল হালিমের অভাব কখনো পূরণ হবার নয়। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এখানকার মুক্তিযোদ্ধাদের বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। চলছে নির্যাতন। হালিম বেঁচে থাকলে কঠোর প্রতিবাদ করতেন। আবদুল হালিম মরেননি। ওঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক কর্মকা- উনাকে আজীবন বাঁচিয়ে রাখবেন সকল মানুষের হৃদয়ে। সরাইলের বড্ডাপাড়া থেকে নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কাটানিশার পর্যন্ত সড়কটির নামকরণ ‘আব্দুল হালিম সড়ক’ করার প্রস্তাব করা হয়। সরাইল প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে সকলের হালিম ভাইয়ের নামে সড়কটি প্রস্তাব বাস্তবায়নের দাবী রাখা হয়। আবদুল গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রয়াত আবদুল হালিমের শোক সভায় উপরোল্লেখিত কথা গুলো বলেছেন বক্তারা। যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক মো. মাহফুজ আলীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন- সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হানিফ মুন্সি, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ আইন সমিতির সাবেক চেষ্টা অ্যাডভোকেট কামরূজ্জামান আনসারী, আ.লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন, সরাইল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল, সরাইল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ বদর উদ্দিন, আ.লীগ নেতা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীর সন্তান অ্যাডভোকেট সৈয়দ তানবির হোসেন কাউসার, জেলার সাবেক ডেপুটি কমান্ডার গাজী মো. রতন মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবদুর রাশেদ, সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার, সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস আলী, চুন্টা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মো. হাবিবুর রহমান, পানিশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান দ্বীন ইসলাম, আ.লীগের সম্পাদক মো. আলী আমজাদ, অরূয়াইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কুতুব উদ্দিন ভূঁইয়া, নোয়াগাঁও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মনসুর আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা আরব আলী, শিক্ষক দেওয়ান রওশন আরা লাকি, মো. আব্দুল্লাহ মিয়া, মো. ইকবাল হোসেন, যুবলীগ নেতা আল-এমরান, মো. বিল্লাল হোসেন, মফিজুর রহমান রনি, ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক হাফিজুল আসাদ সিজার, ছাত্রলীগ নেতা মো. শরীফ মৃধা প্রমূখ।