রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌর নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট করায় ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা আজিবর রহমানকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত আজিবরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আড়ানীর মোমিনপুর ঈদগা মাঠের সামনে এই ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, মুক্তার আলীসহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জনের একটি দল এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আড়ানী পৌর যুবলীগের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আজিবর রহমান মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিজ বাড়ি রুÑমপুর ভারতীপাড়া থেকে আড়ানী পৌর বাজারের দিকে ভ্যান যোগে যাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি মোমিনপুর ঈদগা মাঠের সামনে পৌঁছালে মেয়র মুক্তার আলীর নির্দেশে রাজন. অংকুরসহ ১০-১৫ জনের একটি দল হাতুড়ি ও লোহার রড় নিয়ে আজিবর রহমানের উপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমনে সে মারাত্মক জখম করে এবং ডান পা ভেঙ্গে দেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। হাতুড়ির পিটুনিতে আজিবর রহমানের ডান পাস ভেঙে যাওয়াসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে গুরতর জখম হয়েছে বলে তাঁর ছোট ভাই শিপন আলী নিশ্চিত করেন।
এদিকে নৌকার ভোট করায় হামলাকারীরা সোমবার সন্ধ্যায় আড়ানী বাজারের গনেশের মোবাইল ফোনের দোকান থেকে ৪ হাজার ৩০০ টাকা মূল্যের ৪টি মোবাইল ফোন জোরপূর্বক নিয়ে গেছে। এ ছাড়া হাফিজুল ইসলামের দর্জির দোকান থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা মূল্যের ৬টি কোর্ট জোরপূর্বক নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রসঙ্গত, ১৬ জানুয়ারী নির্বাচনে মুক্তার আলী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীকের শহীদুজ্জামান শাহীদকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর থেকে নৌকার পক্ষে অবস্থান নেয়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত পরাজিত প্রার্থী শাহীদ।
এই ঘটনায় মেয়র মুক্তার আলীকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আজিবর রহমানের স্ত্রী নাজমা রহমান বাদি হয়ে বিকেলে বাঘা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
আহত আজিবর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের পর থেকেই আমাকে মেয়র মুক্তারসহ তার লোকজন হুমকি দিয়ে আসছিল। ঘটনাটি আমি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবগত করেছিলাম। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। তারা আমার ওপর হামলা করে ডান পা ভেঙে দিল।
জানতে চাইলে আড়ানী পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলী বলেন, আমার কোনো লোক কাউকে মারধোর করেনি। তারা নিজেরাই মারাপিট করে আমাদের লোকজনের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।