স্বাদে মিষ্টি। কাশ্মীরি আপেল কুল। ঠিক যেন রঙ আপেলের মতো সবুজ ও হালকা হলুদের ওপর লাল। খেতে খুব মিষ্টি। দেখতে ঠিক ছোট সাইজের আপেলের মত। গাছের ডালে ঝুলছে থোকায় থোকায় বরই। পরিপক্ব বরইগুলো দেখতে ঠিক যেন লাল আপেলের মতো। বলছি, পার্বতীপুর শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দুরে উপজেলার মন্মথপুর ইউনিয়নের তাজনগর মন্ডলপাড়া গ্রামের কৃষক সাগর আলী মন্ডলের রওশনারা আজম এগ্রো ফার্মের বরইয়ের বাগানের কথা। সাগর আলী মন্ডলের তার হাত ধরে আধুনিক কৃষি বিস্তার লাভ করছে। তিনি ঢাকার একটি বে-সরকারি কোম্পনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকুরী করছেন। গ্রামের সাগর আলী মন্ডর উপজেলায় প্রথমবারের মতো কাশ্মীরি আপেল কুলের চাষ করেন। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক তাঁর বাগানে এসে বরই কিনে নিয়ে যান। ফলন ভালো হওয়ায় দামও ভালো পাচ্ছে। এতে খুব খুশি সাগর আলী মন্ডল। তিনি আরও ১ একর বেশি পরিমাণ জমিতে এই বরইয়ের চাষ করেছেন।
বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ৪ ফুট উচ্চতার একেকটি গাছ। এগুলোতে বরই ধরে আছে। বরই ফলের ভারে মাঠিতে নুয়ে পড়েছে কিছুকিছু ডাল। গাছ থেকে আপেল রঙের পাকা বরই ছিঁড়ে দেখালেন বাগানের মালিক সাগর আলী মন্ডল। শহর থেকে কাশ্মীরি বরই কিনতে এখানে এসেছেন বেশ কয়েকজন। ৮০ থেকে ১০০ টাকা প্রতি কেজি বরই বিক্রি হচ্ছে। এই রওশনারা আজম এগ্রো ফার্মে বরই বাগানে সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন ফুল, ফল, সবজির চারা রোপন করে চারা বিক্রি করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, কৃষক সাগর আলী মন্ডল বলেন, গত বছর নাটোর প্রকৃতি নার্সারি থেকে ৩০০টি বরই গাছের চারা কিনে আনেন। এরপর জমিতে এক ফুট লম্বা ৩০০টি বরই গাছের চারা রোপণ করেন। তখনই গাছগুলোতে কেঁচো সার ব্যবহার করেন। বাঁশের খুঁটি দেয়া হয়েছে গাছের বড় বড় ডাল ঠিক রাখতে। নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে গাছে ফুল আসে। ফল পরিপক্ব হবে জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে।
তাজনগর মন্ডলপাড়া গ্রামের ফরহাদ মন্ডল বলেন, বাগানের সুনাম এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি ভালো খবর। শহর ও দূরদূরান্ত থেকে মানুষ বরই কেনার জন্য আসছেন।
চন্ডিপুর ইউনিয়নের উত্তর শালন্দার খেরুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আহসান হাবীব আড়াই বিঘা জমিতে বল সুন্দরী আপেল কুল চাষ হয়েছে। তিনি পুলিশে কর্মরত। শীতের কারণে তার কুল খুব ভালো হয়েছে। আশা করছেন তার বল সুন্দরী আপেল কুল ভাল বিক্রি হবে। এই জমিতে ৭০০ বল সুন্দরী বরই চাষ করেছেন। প্রতিদিন আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম ও শহর থেকে মানুষ এসে বাগান থেকে বরই কিনছেন।
পার্বতীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রাকিবুজ্জামান বলেন, কৃষক সাগর আলী মন্ডল ও আহসান হাবীব যে ভাবে জমিতে কুল চাষ করছে। নিরাপদ ও বিশুদ্ধ উপায়ে উৎপাদন হয়েছে। এখানকার উৎপাদিত কুল দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে আপেল কুল ও কাশ্মেরী আপেল কুলের কর্তনও চলছে। এ জাতের বরই মিষ্টি হয়। খেতে সুস্বাদু। ফলনও বেশি হয়। এতে কৃষকেরা লাভবান হন। কৃষি বিভাগ সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছে।