ময়মনসিংহ বিভাগের সবচেয়ে পুরনো ১৫০ বছর বয়সের ঐতিহ্যবাহী শেরপুর পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনীত প্রার্থীসহ ৭ প্রার্থী, সাধারণ কাউন্সিলর ৪৯ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। কাকডাকা ভোর থেকে শুরু হয়ে এ প্রচারণা চলছে মধ্যরাত পর্যন্ত। দলীয় পরিচয়ের পাশাপাশি সম্মিলিত নাগরিক সমাজ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়ে নিজ নিজ প্রতীকে ভোট দেয়ার আকুল আবেদন জানাচ্ছেন প্রার্থীরা। সমর্থক-কর্মীদের নিয়ে ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। নির্বাচিত হলে কি ধরণের উন্নয়ন করবেন তার ফিরিস্তি তুলে ধরছেন সাধারণ ভোটারদের কাছে।
তবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের হামলা ও হুমকীর শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আঁধার জানান, দলের সমর্থন না পেলেও জনগনের সমর্থন নিয়ে আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছি। জনগন আমাকে ভোট দেয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। আমার পক্ষের গণজোয়ার দেখে সরকারী দলের অতি উৎসাহী একটি অংশ আমার প্রচার প্রচারনায় বাধা দিচ্ছে। আমি হুমকির মুখে আছি। আরেক বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফ রেজা বলেন, আমাদের নির্বাচনে নানা কাজে বাধা দেয়া হচ্ছে।
অপরদিকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী প্রভাষক এবিএম মামুনুর রশিদ পলাশ জানান, শেরপুর পৌরসভা বিএনপির ভোট বেশী। এখানে সুষ্ঠ ভোট হলে আমিই নির্বাচিত হবো। ইতোমধ্যে আমাদের ওপর হুমকি ধমকি শুরু হয়েছে।
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন বলেন, দলছুট বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রত্যাখান করবে জনগণ। দলের সিদ্ধান্ত না মেনে তারা ভূল করেছে। তিনি আশা করেন আমি অন্য প্রার্থীদের চেয়ে কমপক্ষে ১০ হাজার ভোট বেশী পেয়ে বিজয়ী হবো। অন্যদিকে হুমকি ও হামলার বিষয় অস্বীকার করে স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন বলে জানান নৌকা প্রতিকের প্রার্থী। তিনি আরো বলেন, আমি আলোকিত শেরপুর গড়ে তুলবো। অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করবো।
আর ভোটাররা চান কেন্দ্রে গিয়ে কোন ধরনের চাপ ছাড়াই নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারার পরিবেশ তৈরী করে দিতে। আর বেছে নিতে চান সৎ, যোগ্য ও পৌরবাসীর সুখে-দুঃখে পাশে থাকবে এমন মেয়রকে। যিনি পৌরসভার রাস্তাঘাট, ড্রেনসহ পৌরসভার উন্নয়ন করবে যে প্রার্থী তাকেই ভোট দিবেন ভোটাররা। ভোটার অ্যাডভোকেট আলমগীর কিবরিয়া কামরুল জানান, পরিকল্পনা করে যে প্রার্থী শেরপুর পৌরসভার উন্নয়ন কাজ করবে আমরা তাকেই ভোট দিবো। হোটেল ম্যানেজার জাকির হোসেন জানান, আমাদের ড্রেন রাস্তাঘাট যে প্রার্থী করে দিবে তাকেই আমরা ভোট দিবো। ভোটার আপেল মাহমুদ জানান, আমরা গরীব মানুষ আমাদের সমস্যাগুলো যে দেখবে আমাদের যে চিনবে তাকেই আমরা ভোট দিবো।
ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারে সেজন্য সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার।
শেরপুর পৌরসভায় মোট ভোটার ৭৫ হাজার ৭শ ৩৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৬ হাজার ৬শ ৪০ জন ও মহিলা ভোটার রয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৮ জন। ৯টি ওয়ার্ডের ৩৫টি ভোটকেন্দ্রে ৬টি অস্থায়ীসহ ১৯৪ টি বুথে এবার ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হবে। ১৪ ফেব্রুয়ারি শেরপুর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।