শেষ মুহুর্তের প্রচার প্রচারনায় জমে উঠেছে লালমনিরহাট পৌরসভা নির্বাচন। এবারেই প্রথম ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে যাচ্ছে লালমনিরহাট পৌরবাসী। প্রচার প্রচারণাও বেশ জমে উঠেছে। ভোটারদের মধ্যে বেশ আগ্রহও দেখা যাচ্ছে। পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে পৌরবাসীর আগ্রহের শেষ নাই। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে স্যোসাল মিডিয়ায় চলছে আলোচনা আর বিচার-বিশ্লেষন, কে হচ্ছেন লালমনিরহাট পৌরসভার পৌরপিতা.? এখন শুধু অপেক্ষা কবে সেই দিন আসবে?
তবে প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। প্রতীক বরাদ্দের দিন থেকেই ভোটারদের মন জয় করতে মাইকিং, গণসংযোগ, লিফলেট বিতরন ও উঠান বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। চারিদিকে শোভা পাচ্ছে পোষ্টার আর পোষ্টার। যেদিকেই চোখ যায় শুুধু পোষ্টার চোখে পড়ে। গত দুইদিন থেকে লালমনিরহাট পৌর এলাকায় দলীয় প্রার্থীর স্বপক্ষে মিছিলে মিছিলে মখোরিত হয়ে উঠে পৌর এলাকা। দুুুপুরের পর পরই প্রার্থীদের প্রতীক, পোষ্টার ও লিফলেট নিয়ে শুরু হয় এই মিছিল।
এবার লালমনিরহাট পৌরসভার ভোটাররা ভোট দিবেন সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে। এ বিষয়ে ভোটারদের যুক্তি হচ্ছে যে প্রার্থী নিজের জনয় নয়, জনগনের উন্নয়নের জন্য ও একটি মান সম্মত পৌরসভা গঠনের জন্য কাজ করবে আমরা তাকেই ভোট দিব। লালমনিরহাট পৌর নির্বাচনে এবারে মেয়র পদে বিএনপি, আ'লীগ, জাপা, ইশা'র মনোনীত ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন এবার লালমনিরহাট পৌর নির্বাচনে লড়াই হবে ত্রিমুখী।
৯টি ওয়ার্ড নিয়ে লালমনিরহাট পৌরসভা গঠিত। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী রোববার লালমনিরহাট পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ৪৮ হাজার ৭শত ৬৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটা ২৪ হাজার ৭শত ৯৮ জন ও মহিলা ভোটার ২৩ হাজার ৯শত ৭১ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ১৮টি।
এবারে পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে লড়াই করছেন ৫জন প্রার্থী। এদের মধ্যে ৪জন দলীয় ও অপরজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এসব মেয়র প্রার্থীরা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) মোফাজ্জল হোসেন, বিএনপি মনোনীত সাবেক মেয়র (ধানেরশীষ) মোশারফ হোসেন রানা, জাপা মনোনীত (লাঙ্গল) এসএম ওয়াহেদুল হাসান সেনা, ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের (ইশা)'র মনোনীত (হাতপাখা) আমিনুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (নারিকেল গাছ) রেজাউল করিম স্বপন। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৫ জন ও ৯টি ওয়ার্ডে ৪৪জন কাউন্সিলর প্রার্থী পদে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ব্যাপক উৎসব মুখোর পরিবেশে প্রার্থীরা প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ আছে নির্বাচনী প্রচারনায় তাদের বাঁধা এবং মিথ্যা মামলায় তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এই অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার জেলা বিএনপি সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। অপরদিকে আ'লীগ বলছে বিএনপির সন্ত্রাসীরা তাদের নির্বাচনী অফিসে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছে।
সাধারণ ভোটাররা বলছেন, আমরা চাই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হোক, যাতে করে ভোটাররা নির্বিঘেœ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে এবং তার পছন্দের প্রার্থীকে বেচে নিতে পারেন।
এবারেই নতুন ভোটার হয়েছেন পৌরসভার আসিফুল ইসলাম। মনে অনেক আনন্দ নিয়ে তিনি বলেন, এবারেই জীবনে প্রথম কোন নির্বাচনে ভোট দিব, এটা ভেবে নিজেকে খুব ভাল লাগছে। তবে যে প্রার্থী সৎ, যোগ্য এবং পৌরবাসীর উন্নয়নে কাজ করবে জীবনের প্রথম ভোটটা তাকেই দিবেন বলে জানান।
জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম মমিনুুল হক জানান, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু পরিবেশে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ধানেরশীষ প্রতীকের প্রার্থী মোশারফ হোসেন রানা বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন।আমরা সমর্থক ও ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সারা পাচ্ছি। এ নির্বাচনে ধানেরশীষ প্রতীকের প্রার্থীই জয় লাভ করবে।
জেলা আ'লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক গোলাম মোস্তফা স্বপন বলেন, লালমনিরহাট পৌরসভার মাটি আ'লীগের ঘাটি, যা পৌরবাসী নির্বাচনের দিন প্রমান করে দিবেন। তারা নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিপুল ভোটে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেনকে নির্বাচিত করবেন বলেও জানান তিনি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম স্বপন বলেন, পৌরসভার ভোটাররাই আমাকে উৎসাহ প্রদান করেছেন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে। তাই তিনি শতভাগ আশাবাদী আগামী পৌর নির্বাচনে বিপুল ভোটে ভোটাররা তাকেই নির্বাচিত করবেন।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ আবু জাফর বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু পরিবেশে পৌর নির্বাচন অনুুষ্ঠানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন
প্রার্থীর পক্ষে বিন্দুমাত্র দুর্বোলতা দেখানোর কোন সুযোগ নেই প্রশাসনের। পৌর নির্বাচনে প্রশাসন কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।