শিক্ষা নগরী খ্যাত রাজশাহীকে এখন অনেকভাবে বিশেষায়িত করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে- সিল্কের নগরী, আমের নগরী, সবুজের নগরী ও বিশুদ্ধ বাতাসের নগরী। আর অনেকভাবে বিশেষায়িত রাজশাহী মহানগরীর সৌন্দর্য ক্রমশই বাড়ছে। উন্নত সড়ক ও আধুনিক বাতির পর পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এবার গুরুত্ব দিচ্ছে নগর কর্তৃপক্ষ। কারণ, মহানগরীর অন্যতম পর্যটন এলাকা হচ্ছে পদ্মাপাড়। তাই বিনোদনের অন্যতম এই এলাকাটি আরও আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করতে নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে নগর নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।
প্রমত্তা পদ্মার পাশ ঘেঁষা এই বিভাগীয় শহরটির নামের সাথে এখন যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন বিশেষণ। এরই অংশ হিসেবে হযরত শাহ্ মখদুম (রহ:) মাজার সংলগ্ন এলাকায় ও পদ্মা গার্ডেন সংলগ্ন এলাকায় দুইটি ওভারব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিজের সৌন্দর্যবর্ধনে করা হয়েছে নান্দনিক গ্রাফিটি। রং তুলির আচড়ে ওভারব্রিজ দুটিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নান্দনিকভাবে।
দৃষ্টিনন্দন করার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে মহানগরীর বিলসিমলা রেলক্রসিং থেকে কাশিয়াডাঙ্গা মোড় পর্যন্ত ফোরলেন সড়কে স্থাপন করা হয়েছে সুদৃশ্য পোল ও লাইট। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) দাবি, এমন আধুনিক সড়কবাতি দেশের আর কোনো শহরে নেই। দেশে প্রথমবারের মতো এসব আধুনিক সড়কবাতি বিদেশ থেকে আমদানি করে রাজশাহীতে স্থাপন করা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতিগুলো অটোলজিক কন্ট্রোলারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন-অফ হবে। মহানগরীর আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে জ¦লবে এমন আধুনিক বাতি। সেগুলো বাস্তবায়নের কাজও এগিয়ে চলেছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে রাসিকের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সজীবুর রহমান রোববার জানান, শাহ মখদুম মাজারের নিকটে ওভার ব্রিজটিতে ১৮টি পাইলিং করা হয়েছে। এটির স্প্যান ১৮ মিটার। রয়েছে চার মিটারের ৬টি পিলার। ব্রিজটির সৌন্দর্যবর্ধনে ওয়ারক্যাবল সংযোজন করা হয়েছে। আর পদ্মা গার্ডেন সংলগ্ন ওভার ব্রিজটিতে ১২টি পাইলিং করা হয়েছে। এটির স্প্যান ১২ মিটার। ওভার ব্রিজ দুটিতে র্যাম নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিজ দুটিতে সর্বমোট ব্যয় হয়েছে ৯৮ লাখ ১৫ হাজার ৪৫১ টাকা। এটিতে দুটি আর্চ করা হয়েছে। পাইলিং, এ্যাবাটমেন্ট ও উয়িং ওয়ালের উপর নির্মাণ কাজ করা হয়েছে। শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫ টার দিকে হজরত শাহ্ মখদুম (রহ:) মাজার সংলগ্ন ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন ওভার ব্রিজ দুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।
প্রকৌশলী সজীবুর রহমান বলেন, বিশ^ ভালবাসা দিবসের ঠিক পূর্বক্ষণে বিনোদনপ্রেমীদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে পদ্মাপাড়ের এই ব্রিজ দুইটি। এর ফলে মুন্নুজান স্কুল হতে লালনশাহ পার্ক পর্যন্ত পায়ে হেটে যাতায়াত আরও সহজ হবে। উপভোগ করা যাবে পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্য।
দৃষ্টিনন্দন মহানগরী গড়ার বিষয়ে মেয়র লিটন বলেন, আমি দেখেছি, ইউরোপ, আমেরিকা ছাড়াও বিশে^র উন্নত দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে, বিনোদনকেন্দ্রে গ্রাফিটি করা থাকে। তাই আমাদের শহরের সৌন্দর্য্যবর্ধনেও সিটি কর্পোরেশনের অর্থায়নে প্রায় শতাধিক স্থানে গ্রাফিটি করা হচ্ছে। আর পদ্মাপাড়কে ঘিরে আমাদের গ্রহণকৃত পরিকল্পনাগুলো ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে।