জননেত্রী সৈনিকলীগের চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম বলেছেন- আওয়ামী লীগের তৃণমুলের সবাইকে দলীয় আইডি কার্ড দেয়া হোক। তাহলে দলীয় অবস্থান আরো চাঙ্গা হবে। এই কাজটি করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও গণতন্ত্রের মা শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি চাই। প্রয়োজনে এই কাজটি অনলাইনেও করা যেতে পারে। আমরা বহুদিন দলের সাথে জড়িত। তৃণমুলে কাজ করতে গিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের অনেক সমস্যার কথা অবগত আছি। তৃণমুল এসব কর্মীদের কেন্দ্রীয় নেতারা এখন খবর নেয়না। এজন্য আমার অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি- সারা দেশে আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীকে দলীয় আইডি কার্ড প্রদান করলে বুঝা যাবে দেশে কত কোটি দলীয় নেতাকর্মী রয়েছেন। মোট জন সংখ্যার শতকরা কতজন আওয়ামী লীগ করেন। এই কাজটি সারা দেশের তৃণমুলে শুরু করতে হবে। এই কাজটি দলের জন্য অনেক ভাল হবে। আমি চাই যারা দলকে ভালবাসেন তারা অবশ্যই আমার এই আহবানে সাড়া দেবেন। কেন্দ্রীয় নেতারাও আশাকরি আমার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাবেন। আমি তৃণমুলের একজন কর্মী হিসেবে যতটুকু সম্ভব দলের জন্য ওই কাজটি করতে সবাইকে সহযোগিতা করবো। এতে যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতেও তৈরী আছি। নিজের মধ্যে কখনো লোভ-লালসা ছিলনা। বরং দলের জন্য বার বার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। তবুও দলের জন্য অনেক ভালবাসা আছে এবং থাকবে। ইনশাআল্লাহ অতীতে সাধারণ মানুষের যেভাবে পাশে ছিলাম, সামনেও থাকবো। যতই বাধা আসুক; অসহায় মানুষের জন্য কাজ অব্যাহত রাখবো। যারা দলের সাইনবোর্ড ঝুঁলিয়ে দুর্নীতি এবং লুটপাট চালায়, তারা কখনো দেশ এবং দলের বন্ধু হতে পারেনা। তারা সবার শত্রু।
সোমবার সকালে ঢাকার শীর্ষ অনলাইন সংবাদ সংস্থা এফএনএসকে (ফেয়ার নিউজ সার্ভিস) দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে সেলিম বলেন, মানুষকে ভালবাসার মধ্যে দিয়েই প্রকৃত বিনোদন পাওয়া যায়। পদ হারালে অনেক জনপ্রতিনিধি অতীতের ভুল বুঝতে পারেন। আর দায়িত্বে থাকলে নিজের মধ্যে অনেক অহংকার চলে আসে। যারা গরীব-দুঃখী মানুষের কল্যাণে কাজ করেন, তাদেরকে আমি পছন্দ করি। কারণ, আমি নিজে অন্যায়কে প্রশ্রয় দিচ্ছিনা। সন্ত্রাস ও দুর্নীতিকে বরাবরেই ঘৃণা করি। এজন্য মানুষও আমাকে অনেক ভালবাসেন। বিপদে-আপদে ডাকেন। তাদেরই টানে আমি যতই ব্যস্ত থাকি শহরের নানা জায়গায় ছুটে যাই। এই ছুটে চলার মধ্যে কষ্ট হলেও মনে আনন্দ থাকে। নিজের সমস্যার কথা তুলে ধরে সেলিম বলেন, দীর্ঘ ৪৫বছর রাজনৈতিক জীবনে কিছুই পায়নি। পরিবারের কাউকে চাকুরীও দিতে পারিনি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, চট্টগ্রাম মহানগর, থানা ও ওয়ার্ডের নেতারা বিগত মহামারীর মধ্যে আমার খবর রাখেনি। সরকার গরীব অসহায় মানুষদের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যয় করেছেন- এই খবর শুধু খবরের কাগজে এবং টেলিভিশনে দেখতে পাচ্ছি। বাস্তবে কারা এই সাহায্য পেয়েছি; আমি জানিনা। আমাদের দলীয় নেতারা ভোট এলে মাঠে দেখা যায়, এখন তারা কোথায়? সাম্প্রতিক সময়ে তৃণমুলের মতবিনিময় সভা হলেও আমরা আমন্ত্রণ পাইনি। এখানেও আমরা অবহেলিত। দলের কল্যাণে কাজ করতে হালিশহরের সবুজবাগের খানবাড়ী রোডে অফিস চালু করেছি বহু আগেই। সেখান থেকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের খোঁজ-খবর রাখছি। এই করোনার সময়ে অনেক মানুষকে আমি সাহায্য করেছি। মো. সেলিম দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, দলের মধ্যে হাইব্রীড নেতার অভাব নেই। অনুপ্রবেশকারীরা দলকে বার বার লুটেপুটে খাচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে।
তাই বলছি-এসব জুলুমবাজদের প্রতিহত করতে হলে দলীয় আইডি কার্ড চালু করা জরুরী। আমি চট্টগ্রাম বিভাগের যে কোনো জায়গায় গিয়ে কারা আওয়ামী লীগ কিংবা অঙ্গসংগঠনের দায়িত্বে আছেন; তাদেরকে সনাক্ত করতে পারবো। আইডি কার্ড চালু হলে দলের কার কি অবস্থান তাও জানা যাবে। আমার মোবাইল নাম্বার ০১৫৫৩-১৩৪৬৬৭। সেলিম বলেন, সারা দেশে ব্যাপক উন্নয়নের রূপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য নিজের সহায়-সম্বল বিক্রি করে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলায় কাজ করছি। চট্টগ্রাম সিটিরিক্সা শ্রমিকলীগের (রেজি:নং-২১০৩) সভাপতি এই সেলিম আরো বলেন, গত কয়েক বছরে মাটিরাঙ্গার জামেনী পাড়ায় আমি লুটপাটকারীদের অত্যাচারে অন্তত ৫০লক্ষ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। তবুও মনোবল নিয়ে আওয়ামী লীগের জন্য নিজের জীবন দিতেও প্রস্তুত আছি। প্রসঙ্গত, মোহাম্মদ সেলিম চট্টগ্রাম সিটি রিক্সা শ্রমিকলীগের সভাপতি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন রিক্সা চালক-মালিক সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, বাংলাদেশ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বহুমূখী কল্যাণ সমিতির মাটিরাঙ্গা শাখার সভাপতি, সাপ্তাহিক আলোকিত সৌরভের উপদেষ্টা, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আজীবন সদস্যসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করছেন।