স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ ও আউচপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের যোগসাজসে রাজশাহীর বাগমারায় মজপাড়া ডাঙ্গায় জোর পূর্বক জমি দখলের মাধ্যমে তিন ফসলি জমিতে চলছে পুকুর খননের মহোৎসব। তবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মুঠোফোনটি বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। ওই ঘটনায় মজপাড়া গ্রামের শামসুল আলম আলী বাদী হয়ে জেলা প্রশাসক, রাজশাহী পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরারব লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কানাই শহর গ্রামের প্রভাবশালী আমিনুল ইসলাম ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় প্রশাসনকে মেনেজ করে মজপাড়া ডাঙ্গায় তিন ফসলী জমিতে পুকুর খনন শুরু করেন। পুকুর খননের একপর্যায়ে তিনি জমির মালিককে না জানিয়ে জোর পূর্বক জমি দখল শুরু করেন। জমির মালিক বিষয়টি জানতে চাইলে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন শামসুল আলম আলীকে প্রান নামের হুমকি দেয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এসব পুকুর খনন কাজ এলাকায় ব্যবহার করা হচ্ছে অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী। তাদের পাহারা বসিয়ে দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা অবাধে পুকুর খনন করে চলেছে তারা। পুকুর খননের কারণে মজপাড়া ডাঙ্গা এলাকার প্রভাবশালী ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা কিছুটা লাভবান হলেও নি:স্ব হয়ে পড়েছে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা।
ভুক্তভোগী কৃষক আলী ও আউচপাড়া ইউপির স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, সম্প্রতি মজপাড়া ডাঙ্গায় কানাই শহরের প্রভাবশালী আমিনুল ইসলাম প্রায় ৩০ বিঘা জমি জবর দখলের মাধ্যমে পুকুর খননের কাজ করেছে। আবাদি জমি গুলোতে অবৈধভাবে পুকুর খনন অব্যাহত থাকলেও স্থানীয় প্রশাসন রহস্যজনক ভাবে নিরব ভুমিকা পালন করছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
অবৈধ পুকুর খননের কারণে কৃষি জমির পরিমান যেমন কমছে, তেমনি এলাকায় গুলোতে চাষাবাদ হুমকীর মুখে পড়ছে। পুকুর খননের কাজে ডাঙ্গাটিতে প্রায় ১০ টি এস্কেভেটর ও ড্রেজার মেশিনে বসিয়ে খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অবৈধ পুকুর খননের কারণে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন।
অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের জন্য আউচপাড়া ইউনিয়নের মজপাড়া গ্রামের শামসুল আলম আলী স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোন ব্যবস্থা পাননি।
জানা গেছে পুকুর খনন বন্ধে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ রয়েছে যে, জমির প্রকৃতি (শ্রেণী) পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু অবৈধ পুকুর খননকারিরা উপজেলা থেকে শুরু করে জেলা পর্যন্ত প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে ফসলি জমিতে চালিয়ে যাচ্ছে হরদম পুকুর খনন। খননকারীরা বিভিন্ন সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মীদেরও ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছেন। পুলিশের কিছু কর্মকর্তার কারনেই মজপাড়া ডাঙ্গায় অবৈধ পুকুর খননের কাজ চলছে বলে জানা গেছে। পুকুর খনন বন্ধের জন্য থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোস্তাক আহম্মেদ হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জকে নির্দেশ দিলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। বরং তিনটি এস্কেভেটরের পরিবর্তে ৮ টি এস্কেভেটর নামিয়ে দ্রুত গতিতে পুকুর খননের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযুক্ত আমিনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি মুঠোফোনটি রিসিভ করেননি।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ আহমেদ বলেন, বলেন, অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। প্রয়োজন হলে অভিযান আরো জোরদার করা হবে।