রাজশাহীর তানোর পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ২৬ বছর পর প্রথমবারের মতো জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ইমরুল হক। মূলত, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সংগ্রামী সভাপতি লুৎফর হারদার রশিদ ময়না ও তার নেতাকর্মী সমর্থকদের প্রচেস্টায় নৌকার এ বিজয় সম্ভব হয়েছে। এত বছর পর এ ঐতিহাসিক জয়ে আনন্দ উল্লাসে ফেটে পড়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
তথ্যানুন্ধানে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালের ১২ ডিসেম্বর তানোর পৌরসভা স্থাপিত হয়। পরে ১৯৯৬ সালের মার্চ মাসে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পৌর প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু বিধি মতে সরকারের এক নির্দেশনায় ১৯৯৯ সালে পৌর পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনে তৎকালিন সময়ের থানা বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী যুবদলের সভাপতি মরহুম এমরান আলী মোল্লা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে মেয়াদ শেষে ২০০৪ সালে বিএনপি থেকে তিনি আবারও দ্বিতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, উপজেলা পরিষদ পুন:বহাল হলে ২০০৯ সালে পৌর পরিষদ ছেড়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এমরান আলী মোল্লা। এ সময় সরকারের এক প্রজ্ঞাপনে পৌর পরিষদের চেয়ারম্যান পদ বিলুপ্ত হয়ে মেয়র পদ অধিষ্ঠ হয়। এসুযোগে পৌর পরিষদের শূন্যপদে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পান তৎকালিন সময়ের আ.লীগ সমর্থক কাউন্সিলর ইমরুল হক। পরে নিয়ম মতে ২০১১ সালে পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পান প্রদীপ সরকার। তবে, আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মেয়রপদে নির্বাচন অংশ নেন ইমরুল হক। কিন্তু মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা মরহুম ফিরোজ সরকার।
সূত্র আরও বলছে, পরবর্তীতে মেয়াদ শেষে ২০১৫ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ওই নির্বাচনে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পান পৌর আ.লীগ সভাপতি ইমরুল হক। তবে, মাত্র ১৩ ভোটে পরাজিত হন তিনি। এরপর মাঠে তেমন দেখা যায়নি তাকে। কিন্তু সম্প্রতি ১৪ই ফেব্রুয়ারী নির্বাচনে আবারও আ.লীগের মনোনয়ন পান তিনি। এই নির্বাচনে জনগণ তাকে ঢালাও ভাবে ভোট দেন। এতে ২৬ বছর পর এই প্রথম বারের মতো নৌকার ঐতিহাসিক জয় হয়।
নির্বাচনে তানোর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত ইমরুল হক ৫ হাজার ৪১৫ ভোট বেশি পেয়ে মেয়রপদে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি নৌকা প্রতীকে মোট ১২ হাজার ৬৩২ ভোট পান। তার নিকটতম বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র মিজানুর রহমান মিজান ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৭ হাজার ২১৭ ভোট। আর বিএনপির বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী আবদুল মালেক নারিকেল গাছ প্রতীকে পেয়েছেন ২৪৫ ভোট।
এব্যাপারে নবনির্বাচিত মেয়র ইমরুল হক বলেন, মানুষের ভালোবাসায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। আগামীতে পৌরবাসিকে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নতি করায় তার লক্ষ্য। এজন্য সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন তিনি।