কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে ৩হাজার ৫শ টাকায় মুরগির বাচ্চা ফুটানোর হ্যাঁচারি শুরু করে এখন ব্যবসা সফল হয়ে লাখপতি হয়েছেন শাহানুর আলম হ্যাপি ব্যাপারী। সে উপজেলার কেদার ইউনিয়নের পূর্ব টাপু এলাকার শামছুল আলম ব্যাপারীর ছেলে।
হ্যাপির সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন সময় ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাতেন তিনি। এতে তার পরিশ্রমের তুলনায় আয় হতো কম। এভাবে শ্রমিকের কাজে মনে প্রশান্তি পেতেন না তিনি। একসময় কাজ ছেড়ে বেকার হয়ে পড়লে হতাশাময় জীবন তাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিলো। স্বপ্ন দেখেন বিকল্প কিছু করার। সকল হতাশাকে দূরে ঠেলে দিয়ে অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভের স্বপ্ন দেখেন উদ্যমি যুবক হ্যাপি। সকল চিন্তার অবসান ঘটিয়ে মাত্র ৩হাজার ৫শ টাকায় কিনে নেন মুরগির ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা উৎপাদনের একটি ইনকিউবেটর মেশিন। ডিম সংগ্রহ করে উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সাপখাওয়া বাজারে হ্যাঁচারি দিয়ে শুরু করেন ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন ব্যবসা। দিনরাত পরিশ্রম করে স্বপ্ন দেখেন লাভবান হয়ে সংসার চালানোর। আর এতেই সাফল্যের সূর্যদয় হতে থাকে তার জীবনে। অল্প পুঁজিতে এমন লাভের মুখ দেখে জোরেসোরে নেমে পড়েন এই ব্যবসায়। ধীরে ধীরে ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকে। একে একে তার হ্যাঁচারিতে এখন রয়েছে ৬টি ইনকিউবেটর মেশিন। এগুলোর প্রতিটি মেশিন থেকে প্রতি মাসে প্রায় ৭শ বাচ্চা উৎপাদন করেন এই যুবক। ৬টি মেশিনে এখন তার বাচ্চা উৎপাদন হয় প্রায় ৫হাজার। উৎপাদিত বাচ্চা দূর দূরান্ত থেকে আসা বিভিন্ন খামারীর কাছে বিক্রি করেন তিনি। অপরদিকে তার হ্যাঁচারিতে ২ হাজার ডিম ফুটানোর জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়াও ফুটানো বাচ্চা রয়েছে ৩হাজার। খুচরা ও পইকারী বিক্রর জন্য দেশীয় বড় মুরগী রয়েছে ৩শর অধিক। সব খরচ বাদে এখন তার প্রতিমাসে আয় হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এখন আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় না তার। তবে সরকারি সহযোগিতা পেলে তার ব্যবসায় আরও প্রসার ঘটবে বলে জানায় এই যুবক।
হ্যাপির এই সাফল্যে উৎসাহ পেয়ে এই ব্যবসার চিন্তা করছেন স্থানীয় আরও কয়েক যুবক। তারা জানায় মাত্র দুই বছরে জিরো থেকে হিরো বনে গেছে হ্যাপি। ব্যাপক লাভজনক তার এই ব্যবসা। তাই বেকার না থেকে এমন খামার করার উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন বলেও জানান তারা।
এ ব্যাপারে শাহানুর আলম ব্যাপারী হ্যাপি বলেন, আমি অনেক কষ্টের পর এই ব্যবসায় সফলতা পেয়েছি। আমার এখানে এখন দূর-দূরান্ত থেকে অনেক খামারি এসে বাচ্চা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে রোগ বালাই প্রতিরোধের জন্য সহযোগিতাসহ অন্যান্যভাবে সরকারি সহযোগিতা পেলে আমি এ ব্যবসাকে আরও বড় করতে পারব।
উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মনজুর আলম বলেন, আমরা চাই যুবকরা বসে না থেকে উদ্যোক্তা হয়ে বেকারত্ব দূর করুক। আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করব। আর হ্যাপির এই উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। আমরা তার এই খামার পরিদর্শন করে সহযোগিতা করব।