খুলনার পাইকগাছায় ছোট এই গ্রামের নাম ওড়াবুনিয়া। লোকসংখ্যা ৫ শতাধিক। নেই কোনো যাতায়াত ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা। স্বাধীনতা পরবর্তী এত বছরেও এলাকার মানুষের জীবন যাত্রামান উন্নয়ন হয়নি। নাম মাত্র যাতায়াতের রাস্তা থাকলেও লবণ পানির চিংড়ি ঘেরে পানির ঢেউয়ে তা বিলিন হতে চলেছে। যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বাঁশের ব্রিজ ও সাঁকো। প্রতিদিন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। নারীরা সুপেয় পানি আনার জন্য এই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন। উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নে অবস্থিত অবহেলিত গ্রামটির নাম ওড়াবুনিয়া। যাতয়াতের জন্য কোনো রাস্তা নেই। গ্রামটির চারপাশে শুধু পানি আর পানি। কিন্তু তা মাছ ও ফসলের কাজের জন্য। সুপেয় পানি পানের কোনো উপযোগী ব্যবস্থা নেই। গ্রামবাসীরা স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘ ৫০ বছর পর জনপ্রতিনিধিদের কাছে শুধু আশ্বাস পেয়েছেন। নেইনি কোনো ব্যবস্থা। গ্রামটিতে পাঁচ শতাধিক মানুষের বসবাস থাকলেও ভোটের সময় শুধু খোঁজ নেন। তার পর আর কেউ খোঁজ রাখেন না বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা তপন কুমার মন্ডল ও শিবানী রানী মন্ডল। বর্ষা মৌসুমে দূর থেকে দ্বীপবেষ্ঠিত মনে হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, গজালিয়া চৌরাস্তা থেকে পশ্চিমে কয়েক কিলোমিটার লম্বা গ্রামটি। যাতায়াতের জন্য একটি মাত্র মাটির রাস্তা থাকলে ও সেটি অত্যন্ত সরু ও নিচু। রাস্তার পশ্চিম পাশে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লোকজন যাতায়াত করে। গ্রামে একটা প্রাইমারী স্কুল রয়েছে। যেখানে বর্ষাকালে ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে যেতে হয়। মাধ্যমিক বা কলেজগামী শিক্ষার্থীদের পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। গ্রামের নারীরা খাওয়ার পানি আনতে যেতে হয় পায়ে হেঁটে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে। রাস্তা না থাকায় নেই কোনো যানবাহন। স্কুল শিক্ষক তপন কুমার মন্ডল জানান, বর্ষা মৌসুমে আমাকে দুইটি পোশাক নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। একই কথা বলেন দশম শ্রেণীী পড়ুয়া শিক্ষার্থী ছবি রানী মন্ডল। স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম হিরা বলেন, রাস্তার দু'পাশে মৎস্য ঘের ও সরকারী খাল থাকায় রাস্তার কাজ করা সম্ভব হয় না। বাঁশের সাঁকো ও মেরামত করা হলেও বর্ষা মৌসুমে পানির চাপের কারণে ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে যায়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, রাস্তার জন্য ত্রাণ মন্ত্রনালয় থেকে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। খালের উপর ব্রিজের জন্য মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। খুলনা-৬ সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণের যাবতীয় প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে।