নীলফামারীতে সমবায় সমিতির আড়ালে নারীদের টার্গেট করে ৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার মূল হোতা মামুন হাসান মালিককে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ঢাকার সাভার থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
১৮ ফেব্রুয়ারি র্যাব-১৩ সদর কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর আব্দুল্লাহ আল মঈন হাসান প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
র্যাব-১৩ অধিনায়ক (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, ২০২০ সালের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে মামুন হাসান মালিক ওরফে আদম সুফি সহযোগীদের নিয়ে নীলফামারী জেলার ডোমার থানার সাহাপাড়ায় প্রাক্তন কুইন্স কিন্ডার গার্ডেন স্কুল ঘরটি ভাড়া নিয়ে ডোমার বাজার ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি নামক ব্যানার লাগিয়ে এলাকার সহজ-সরল নারীদের টার্গেট করে প্রতারক চক্রটি সমবায় সমিতির মাধ্যমে লোভনীয় অফার দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়া শুরু করে। সমবায় সমিতির মাধ্যমে কয়েকজন নারী সদস্য প্রাথমিকভাবে তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মূল টাকাসহ লভ্যাংশ প্রাপ্ত হলে এলাকার অধিকসংখ্যক মহিলা নিজের সহায় সম্বল বিক্রি করে চটকদার এ সমিতির সদস্য হন।
এভাবে সমবায় সমিতির আড়ালে এই প্রতারক চক্রটি মাত্র ২ মাসে ৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করে এবং আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সমিতির অফিস বন্ধ করে পালিয়ে যায়। ফলে টাকা উদ্ধার করতে না পারায় ভুক্তভোগী কয়েকজন নারী তাদের স্বামী কর্তৃক তালাক প্রাপ্ত হয় এবং একই ঘটনায় ১জন মহিলা হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
তিনি আরও বলেন, টাকা দিয়ে সর্বশান্ত শতাধিক নারী এবং ওই কোম্পানির প্রায় শতাধিক নারী কর্মী গত বছরের ২০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী বরাবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এছাড়াও নীলফামারী জেলার ডোমার থানা ২৪ জানুয়ারি ৪জন প্রতারকের নামে একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন। এবং র্যাব-১৩ নীলফামারী কোম্পানি কমান্ডার বরাবর একটি অভিযোগ দেন।
ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব বিষয়টি অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনা করে প্রতারণা চক্রের মূল হোতা মামুন হাসান মালিককে ঢাকার সাভারের নিকট আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিকভাবে প্রতারক মামুন হাসান নীলফামারী জেলায় এ প্রতারণার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে এবং তার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।