সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামে দু’পক্ষের আধিপত্য বিস্তার ও একটি কোম্পানির বালু ভরাটকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষে সমর আলী (৪৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কা জনক। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে হাজী আলাউদ্দিন গ্রুপের লোকজন প্রতিপক্ষ বরকত মোল্লার লোকজনের উপর আতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় বরকত মোল্লার ছোট ভাই সাদেক মিয়াকে কুপিয়ে আহত করে এবং তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ কয়েকটি বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। এ সময় বরকত মোল্লার লোকেরা পাল্টা হামলা চালিয়ে হাজী আলাউদ্দিনের বাড়ি ও গাড়ী ভাংচুর করে। এ ব্যাপারে রাতেই হাজী আলাউদ্দিন বাদী হয়ে ১৪ জনকে আসামি করে সোনারগাঁ থানায় ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এঘটনার পরদিন শনিবার সকালে উভয় পক্ষ পুনরায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এ সময় বরকত মোল্লার পক্ষের মুক্তিযোদ্ধা বরজাহান, রেখা, তাসলিমা, সায়বা, জাবেদ, জিসান, খোরশেদ, সাইদুর, জহিরুল, সুমন, বিপ্লব, মাহাফুজ এবং হাজী আলাউদ্দিনের পক্ষের সমর আলী, জাহিদুল ইসলাম, মাহিলউদ্দিন, মোশারফ, নুর নবী, নিলা, দেলোয়ার হোসেন, আবদুল আলীসহ উভয় পক্ষের প্রায় ৩০ জন আহত হয়। আহত সমর আলীকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। গ্রামটি প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে। শুধু মাত্র দু’এক জন বয়স্ক নারী ও শিশুদের দেখা গেছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টি এম মোশারফ হোসেন, সিনিয়ির সহকারী পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাহিন ফরাজি, ডিবি, সিআইডি ও সোনারগাঁ থানা পুলিশ ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনা স্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আহত সাদেকুর রহমান ওরফে সাদেক মোল্লার স্ত্রী শেফালী বেগমের অভিযোগ, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার স্বামীর দোকানে ৩০/৩৫ জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। আলাউদ্দিনের নির্দেশে হত্যার উদ্দেশ্য বাদল, নুরনবী, ইয়ানবি, মঞ্জুর, সমর আলী আমার স্বামীকে কুপিয়ে জখম করে। এছাড়াও আমাদের লোকজনের দোকান ও বাড়িঘরে শুক্রবার ও শনিবার সকালে দুই দফায় ভাংচুর করে ও ২০/২২ জনকে কুপিয়ে আহত করে। হাজী আলাউদ্দিনের ছেলে নুর নবী পুলিশ সদস্য হওয়ায় এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছে।
অপরদিকে হাজী আলাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তারা উশৃঙ্খল লোক। আমার আত্মীয় সমর আলীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। শুক্রবার রাতে আমি বাড়ি ফেরার সময় আমার উপর তারা হামলা চালায়। পরে আমি সোনারগাঁ থানায় মামলা করলে শনিবারও আমাদের লোকজনের বাড়িঘর ও দোকান ভাংচুর ও লোক জনকে কুপিয়ে জখম করে।
সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) তবিদুর রহমান বলেন, দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।