নোয়াখালীর সদর উপজেলার কাদিরহানিফ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে নিজের কলেজ সহপাঠির সাথে কথা বলা অবস্থায় (১৯) এক কলেজ ছাত্রীকে জোর পূর্বক আটক করে বিবস্ত্র করে ছবি ও ভিডিও ধারন। পরে তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে গণধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তিন যুবকের বিরুদ্ধে। একই সাথে ওই তিন যুবকের হাতে শারীরিক লাঞ্চিত হয়েছে ছাত্রীর সহপাঠি, অশ্লিল ছবিও ধারন করা হয়েছে তার। ঘটনায় নির্যাতিতা ওই ছাত্রী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করলেও এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে অভিযুক্ত তিন আসামী। প্রতিনিয়ত আসামিরা বিভিন্ন মাধ্যমে নির্যাতিতার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এদিকে মামলার ৩নং আসামি রায়হান বিদেশ গমনের চেষ্টা করার খবর পেয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশের মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার সকালে সরজমিনে নির্যাতিতার বাড়ীতে গিয়ে ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী সরকারি বিশ^বিদ্যালয় কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে কৃষ্ণরামপুর গ্রামে তাদের বাড়ী গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে তার সহপাঠী (২০) এর সাথে দাড়িঁয়ে পরীক্ষার সাজেশনের বিষয়ে কথা বলছিল। এ সময় বাড়ীতে তার ছোট ভাই থাকলেও মা-বাবা আত্মীয়ের বাড়ীতে ছিলেন। এশার নামাজের আযান হওয়ায় তার ছোট ভাই বাড়ীর পাশ^বর্তী একটি মসজিদে নামাজ পড়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর পুলক মজুমদার, আকবর হোসেন ও রায়হান উদ্দিন এসে ওই ছাত্র-ছাত্রীর সাথে টানা হেঁচড়া শুরু করে। একপর্যায়ে ওই তিনজন তাদের ধাক্কা দিয়ে ছাত্রীর ঘরের ভিতরে নিয়ে যায়।
নির্যাতিতা ছাত্রীর অভিযোগ, ঘরের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার পর রায়হান তার সহপাঠিকে তাদের রান্নার কক্ষে ও পুলক এবং আকবর ঘরের ভিতরের কক্ষে তাকে নিয়ে যায়। ওই কক্ষে গিয়ে প্রথমে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর ও পরে জামা কাপড় খুলে বিবস্ত্র করে তাদের সাথে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। এ সময় পুলক ও আকবর তার কাছে ৫০হাজার টাকা দাবী করে অন্যথায় তার এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। কিন্তু ওইছাত্রী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে পুলক ও আকবর তাকে গণধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এরইমধ্যে ছাত্রীর গোংরানিতে পাশের সড়ক দিয়ে যাওয়া লোকজন এগিয়ে আসলে অভিযুক্ত তিনজন পালিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় নির্যাতিতা বাদী হয়ে শনিবার রাতে পুলক, আকবর ও রায়হানকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সুধারাম মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর পুলক মজুমদারের বড় ভাই সুজন মজুমদার রাত ১২টার দিকে তাদের বাড়ীতে এসে জোর পূর্বক নির্যাতিতা ছাত্র-ছাত্রীকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর থেকে আসামিরা বিভিন্ন ভাবে ওই ছাত্রী ও তার পরিবারের লোকজনকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন বলেন, ওইছাত্রীর দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত তিন আসামীকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। অপরদিকে মামলার তিন নং আসামি বিদেশ গমনের সংবাদ পেয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।