পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ২ শতাধিক পরিবারের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন বাঁশের ও বেতের তৈরি পণ্য। উপজেলার অমৃতকুন্ডা,মাঝগ্রাম,মির্জাপুর,হান্ডিয়াল,গুনাইগাছা,হরিপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ২ শতাধিক পরিবার বাঁশ ও বেতপণ্যের সাথে জড়িত। এ পেশাতেই চলে তাদের জীবন-জীবিকা। চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের অমৃতকুন্ডা দাসপাড়ার প্রায় সকল পরিবারই এ পেশার সাথে জড়িত। শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত বাঁশ-বেত পণ্য তৈরিতে নিয়োজিত।
বাঁশ ও বেত দিয়ে কুলা.ডালা,চালনা,ঢাকি,মাছ ধরার খালই,ঢাকনা,পেন্সিল বক্স,কলমদানি,ফুলের টব,তালাইসহ হরেক রকম পণ্যসামগ্রী তৈরি করা হচ্ছে। দৈনন্দিন সাংসারিক কাজে ব্যবহৃত এসব পণ্য বিক্রি করতে দোকান খোলা হয়েছে। এছাড়াও বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্য ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানেসা হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে হাট-বাজারে। গ্রামে গ্রামে ফেরি করেও এসব পণ্য বিকোচ্ছে।
এ পেশার সাথে জড়িত মিনু দাস,আরতি রানী,শিমু দাসসহ অন্যরা জানান,বাঁশ ও বেতের দাম অনেক বেড়েছে। তাছাড়া প্লাস্টিক পণ্য বাজার দখলে নিয়েছে। ফলে তারা বাপ-দাদার পেশা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে তারা আরো বেকায়দায় পড়েছেন। কোন প্রকার প্রণোদনা তারা পাননি। তারা জানান,বিভিন্ন এনজিও থেকে তারা চড়া সুদে ঋণ পেলেও সরকারিভাবে বা ব্যাংকের মাধ্যমে সহজ শর্তে তারা ঋণ পান না। করোনার এ সময় এনজিও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে তারা সর্বশান্ত হচ্ছেন। সহজ শর্তে ঋণ পেলে তাদের ব্যবসা ভালো করা যায়। তাদের আর্থিক সমস্যা দূর হলে কাজের পরিধি বাড়বে।
পরিবেশবিদরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন,ক্ষতিকর প্লাস্টিক পণ্যের ভিড়ে ঐতিহ্যবাহী ও পরিবেশ বান্ধব বাঁশ ও বেত শিল্প ধ্বংসের পথে। দিন দিন কমছে বাঁশ ও বেত শিল্পের সাথে জড়িতদের সংখ্যা। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা।