খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট একটি অযাচিত উপদান এবং তা নিত্য খাদ্য দ্রব্যের সাথে গ্রহণের ফলে যে সকল স্বাস্থ্যক্ষতি ও মৃত্যু সংঘটিত হচ্ছে তা পুরোপুরিভাবে প্রতিরোধ করতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে নীতি প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে যা একটি সময়পোযোগী এবং অত্যন্ত প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপাত্ত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বাংলাদেশে বছরে অন্তত ৫৭৭৬ জন মানুষ শুধ্মাত্র ট্রান্সফ্যটের কারণেই মৃত্যুবরণ করছে, অর্থাৎ মাসে ৪৮০ জন। যতই বিলম্বিত হচ্ছে ট্রান্সফ্যাট বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন, ততই অনাকাঙ্খিত প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। তবে জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা বিবেচনায় ইতোমধ্যে বিএফএসএ দ্বারা প্রাথমিক খসড়া নীতিমালা প্রায় প্রস্তুত হয়ে গেলেও চূড়ান্ত নীতিমালা প্রণয়নের অগ্রগতি এগোচ্ছে মন্থর গতিতে। প্রাথমিক খসড়ার কাজ শেষ হলে সেটি তাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হবে ৪০ দিনের জন্যে। যেখানে খসড়া নীতিমালা সম্পর্কে সকলের মতামত গ্রহণ করা হবে। তারপর তা চূড়ান্ত নীতিমালা আকারে প্রণয়নের জন্য পাঠানো হবে মন্ত্রণালয়ে।
সূত্র জানায়, সাধারণত প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার ও বেকারি পণ্যে বিদ্যমান ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড (টিএফএ) বা ট্রান্সফ্যাট এক ধরণের ফ্যাট বা স্নেহ জাতীয় খাদ্য উপাদান যা রক্তের এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে। অপরদিকে এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। অতিরিক্ত ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণে খারাপ কোলেস্টেরল রক্তবাহী ধমনিতে জমা হয়ে রক্তচলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যা অকাল মৃত্যুর অন্যতম কারণ। অথচ ট্রান্সফ্যাটের ক্ষতি সম্পর্কে দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষেরই ধারণা নেই।
উচ্চমাত্রায় ট্রান্সফ্যাট (ট্রান্স ফ্যাটি এসিড) গ্রহণ হার্ট অ্যাটাকসহ হৃদরোগজনিত মৃত্যুঝুঁকি বৃদ্ধি করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন মতে বিশ্বে ট্রান্সফ্যাট ঘটিত হৃদরোগে মৃত্যুর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই ঘটে ১৫টি দেশে। যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১ লক্ষ ৩১ হাজার মানুষ সার্বিকভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। যার মধ্যে ৪.৪১ শতাংশ অর্থাৎ ৫৭৭৬ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ি ট্রান্সফ্যাট। শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট নির্মূলে সর্বোত্তম নীতি অর্থাৎ সকল ফ্যাট, তেল এবং খাবারে প্রতি ১০০ গ্রাম ফ্যাটে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ পরিমাণ ২ গ্রামে সীমিত করা, অথবা পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল-পিএইচও’র উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। একই সাথে শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ।
সূত্র বলছে, শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্র্রোজেনেটেড অয়েল বা পিএইচও। যা বাংলাদেশে ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামে পরিচিত। সম্প্রতি ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট-এর গবেষণায় ঢাকার শীর্ষস্থানীয় পিএইচও ব্র্যান্ডসমূহের মোট ২৪টি নমুনা বিশ্লেষণ করে ৯২ শতাংশ নমুনায় ডব্লিউএইচও সুপারিশকৃত ২ শতাংশ মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্স ফ্যাট (ট্রান্স ফ্যাটি এসিড) পাওয়া গেছে। প্রতি ১০০ গ্রাম পিএইচও নমুনায় সর্বোচ্চ ২০.৯ গ্রাম পর্যন্ত ট্রান্স ফ্যাটের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে, যা ডব্লিউএইচও’র সুপারিশকৃত মাত্রার তুলনায় ১০ গুণেরও বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম নমুনায় গড়ে ১১ গ্রাম ট্রান্সফ্যাট পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে পিএইচও বা ডালডা সাধারণত ভাজা পোড়া স্ন্যাক্স ও বেকারিপণ্য তৈরি এবং হোটেল-রেস্তোরাঁ ও সড়ক সংলগ্ন দোকানে খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
খাদ্যের সাথে ট্রান্সফ্যাট গ্রহণের ফলে দীর্ঘদিন দিন ধরে জনস্বাস্থ্যের এত ক্ষতিসাধন হলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নীরব ভুমিকায় রয়েছে।
এ বিষয়ে ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশ, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ক্যাব) এবং অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এর সহযোগিতায় ‘ট্রান্সফ্যাট নির্মূল করি, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাই’ শীর্ষক একটি অ্যাডভোকেসি ক্যাম্পেইন উদ্বোধন হয়।
ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি বলেছিলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাট নির্মূল করতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে। তিনি বলেন, খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটের সর্বোচ্চ মাত্রা ২ শতাংশ নির্ধারণ করতে নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করাও জরুরি। অথচ পরবর্তী এক বছর সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনও রকম পদক্ষেপগ্রহণ করার তথ্য পাওয়া যায় নি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবে মিল্লাত এমপি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় আমরা নিশ্চয় ২০২৩ সালের মধ্যে খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা ২ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারব। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে ট্রান্স ফ্যাট নির্মূল করতে নীতি প্রণয়নে পূর্ণ সহযোগিতারও আশ্বাস দেন তিনি।
অন্যদিকে ভোক্তা সাধারণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাট নির্মূল করতে করণীয় এবং ভোক্তা স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ৯ দফা ভোক্তা দাবিনামা তুলে ধরে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে সিরডাপ মিলনায়তনে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) সম্মিলিতভাবে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর সহযোগিতায় ‘খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট, হৃদরোগ ঝুঁকি এবং করণীয়: ভোক্তা পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা আয়োজন করে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেছিলেন, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট নির্মূলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ৯ দফা ভোক্তা দাবিনামা বাস্তবায়ন করা হবে। আর ট্রান্স ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে পুরাতন আইন সংস্কারের মাধ্যমে যুগোপযুগী করা হবে।
তবে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এ- টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে স্বাক্ষরিত এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করে যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় বিএসটিআই ইতোমধ্যে পরীক্ষণ সুবিধাদি সৃষ্টিসহ ট্রান্স-ফ্যাট প্যারামিটারটি সংশ্লিষ্ট পণ্যের জাতীয় মানে অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি ভারতের নিরাপদ খাদ্য ও মান নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (এফএসএসএআই) তাদের নিরাপদ খাদ্য ও মান (বিক্রয়ের নিষেধাজ্ঞা ও বাধ্যবাধকতা) বিষয়ক প্রবিধানমালা সংশোধন করে তেল ও ফ্যাট দিয়ে তৈরি সকল খাদ্যপণ্যে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত) ধার্য করেছে। এর মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই এফএসএসএআই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী সকল তেল ও ফ্যাটে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ নির্ধারণ করে। যা আগামী ২০২২ সালের জানুয়ারি মাস থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে। সংশোধিত প্রবিধানমালাটি সকল পরিশোধিত ভোজ্য তেল, বনস্পতি ঘি (পিএইচও), মারজারিন, বেকারি শরটেনিং ও ভেজিটেবল ফ্যাট স্প্রেড এবং মিক্সড ফ্যাট স্প্রেডসহ অন্যান্য রান্নার উপকরণ দিয়ে তৈরি সকল খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
এ বিষয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) রাজশাহী শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম মোস্তফা মামুন মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রতিবেদককে বলেন, বাংলাদেশে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা না থাকায় জনস্বাস্থ্যমারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এমতাবস্থায়, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সবধরনের ফ্যাট, তেল এবং খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চসীমা মোট ফ্যাটের ২ শতাংশ নির্ধারণ পূর্বক কার্যকর করা অতীব জরুরী।
ক্যাব নেতা মামুন বলেন, সহায়ক পদক্ষেপ হিসেবে মোড়কজাত খাবারের পুষ্টিতথ্য তালিকায় ট্রান্স ফ্যাটের সীমা ও উপকরণ তালিকায় পিএইচও-এর মাত্রা উল্লেখ বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। আর ফ্রন্ট অব প্যাকেজ লেবেলস বাধ্যতামূলক করা। এর ফলে খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্সফ্যাটের উপস্থিতি নির্দেশ করবে।
নীতি প্রণয়নের অগ্রগতি বিষয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোঃ আবদুল কাইউম সরকার মঙ্গলবার বিকালে প্রতিবেদককে বলেন, ‘জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা বিবেচনায় ইতোমধ্যে বিএফএসএ দ্বারা প্রাথমিক খসড়া নীতিমালা প্রস্তুত করা হয়েছে। আশা করছি, খুব শিঘ্রই ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টসহ জনগণের মতামতাতের জন্য উন্মুক্ত করতে পারবো। মতামতের জন্য বিষয়টি ওয়েবসাইটেও দেয়া হবে।’
ট্রান্সফ্যাট বিষয়ক টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ও বিএফএসএ-এর সদস্য মঞ্জুর মোরশেদ আহমেদ মঙ্গলবার প্রতিবেদককে বলেন, ‘ডব্লিউএইচও সহ এ বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করা প্রতিষ্ঠানের মতামত গ্রহণের লক্ষ্যে ইংরেজিতে তৈরি করা খসড়া কপি পাঠিয়েছিলাম। ইতোমধ্যে তাদের কাছ থেকে পাওয়া মতামতটি সংশোধন করেছি। এখন সেটি বাংলায় অনুবাদ করার কাজ চলছে। আশা করছি, আগামী এক মাসের মধ্যেই প্রস্তুত করার কাজ শেষ হবে। এরপর মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করার পর তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’
এ সম্পর্কে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এর সাউথ এশিয়া প্রোগ্রামস এর রেজিওনাল ডিরেক্টর বন্দনা শাহ্ বলেন, ‘নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য ব্যবস্থাপনায় ভারতের খাদ্য সরবরাহ থেকে এই ক্ষতিকর উপাদান নির্মূলের মাধ্যমে দেশটি সঠিক ভাবেই এক ধাপ এগিয়ে গেলো।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সর্বপ্রথম ২৩ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে ভোজ্য তেল এবং বনস্পতি/ডালডা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এক আলোচনা সভায় ট্রান্স ফ্যাট-এর শতকরা হার ২ বা ২ গ্রাম/১০০ গ্রাম নির্ধারণ করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এরপর তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ও স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে দশ সদস্য বিশিষ্ট একটি ট্রান্সফ্যাট বিষয়ক টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করে। সর্বশেষ গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে টেকনিক্যাল কমিটির সভায় ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে নীতি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এবং ইতোমধ্যে খসড়া প্রণয়নের কাজ শুরু করে। সেই সাথে মোড়কজাত বা প্যাকেটজাত খাদ্যপণ্যের লেবেলে ট্রান্সফ্যাটের পরিমাণ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করার বাধ্যবাধকতা জারি করার জন্যও কাজ করছে বিএফএসএ।
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক নীতি চূড়ান্ত করার দাবী জানিয়ে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)-এর নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, কোনো অজুহাতেই ট্রান্সফ্যাট মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়ায় বিলম্ব করা যাবেনা। ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের মাধ্যমে সারা দেশের হাজারো মানুষ প্রতিবছর হৃদরোগের মারাত্মক ছোবল থেকে রক্ষা পাবে। আর প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সচেতনতা ও জনমত বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ফেইসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে Heart Health Alert BD <www.facebook.com/hearthealthalertbd> শীর্ষক সুসংগঠিত একটি ক্যাম্পেইনও পরিচালনা করছে।