ফরিদগঞ্জে গত ৩দিনের ব্যবধানে ৩টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২২ ফেব্রয়ারি) সকালে থানা পুলিশ পৌর এলাকার ভাটিয়ালপুর এলাকা থেকে মোক্তার মিয়া (২৮) নামে প্রবাস ফেরত সদ্য বিবাহিত যুবকের এবং একইদিন বিকালে কাছিয়াড়া গ্রাম থেকে মৌসুমী আক্তার (২২) নামে এক মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। ২১ ফেব্রুয়ারী রাতে রুপন দাস নামের এক যুবক সিলিং ফ্যানের গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ৩টি লাশই উদ্ধার করে পোস্ট মর্টেমের জন্য চাঁদপুর প্রেরণ করেন।
মোক্তার মিয়া ফরিদগঞ্জ পৌরসভাধীন ভাটিয়ালপুর গ্রামের মিয়া বাড়ির মৃত আবিদ মিয়ার ছেলে। তিন ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে সবার ছোট সে। পরিবারের লোকজনের দাবী কীটনাশক পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে চার দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে রোববার গভীর রাতে সে মারা যায়। মোক্তারের ভাই আকবর মিয়া জানান, ‘মোক্তার প্রায় বছর খানেক পুর্বে মালয়েশিয়া থেকে বাড়িতে আসে। মহামারি কোভিড-১৯ শুরু হওয়ায় আর সেখানে যেতে পারেনি। এরইমধ্যে বিগত বছরের ১৬ ডিসেম্বর পাশ^বর্তী মধ্যচাঁদপুর গ্রামের কুদ্দুছ হোসেনের মেয়ে ফাহিমাকে বিয়ে করে। স্ত্রী ও মাকে নিয়ে ভাটিয়াল চৌরাস্তার সন্নিকটে নতুন বাড়িতেই বসবাস করতো। এরইমধ্যে গত ১৮ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার সে কীটনাশক পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে পরিবারের লোকজন টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ঢাকা প্রো-এ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ এ- হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে সে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় গত রোববার গভীর রাতে মারা যায়। এরপর সেখান থেকে তার মৃতদেহ নিয়ে আসা হয় তার বাড়িতে। সংবাদ পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ তার বাড়ি থেকে সোমবার দুপুরে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করে।
অপর দিকে, মৗসুমী আক্তার পৌর এলাকার পুর্ব বড়ালী গ্রামের গাজী বাড়ির আবুল হোসেন গাজীর মেয়ে ও ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার ফাযিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। স্বপরিবারে তারা দক্ষিণ কাছিয়াড়া গ্রামের খলিফা বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতো। পরিবারের দাবী তার কিছুটা মানসিক সমস্যাগ্রস্থ ছিল। সোমবার সকালে সে নিজ ঘরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
এদিকে গত ২১ ফেব্রুয়ারী উপজেলার পূর্ব আলোনিয়া গ্রাম থেকে রুপন দাস (২৭) নামে সনাতন ধর্মের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রুপনের মা আবা রানী দাস এর দেয়া সূত্রে জানা গেছে, সে দীর্ঘ ৭ বছর যাবত মানসিক ভারসাম্যহিন ছিলো, সে ওইদিন রাতে রুপন তার সয়ন কক্ষে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহনন করে।
এব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদ হোসেন জানান, মোক্তার মিয়া ঢাকা প্রো-এ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ এ- হাসপাতাল কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেটে বিষপান জনিত কারণে মৃত্যুর বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। অন্যদিকে মৌসুমী প্রাথমিক ভাবে গলায় ফাঁস দিয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। দুটি লাশই উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।