আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি কর্তৃক মেঘনা নদী ভরাটের অভিযোগে ভরাটকৃত স্থান পরিদর্শন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে মতবিনিময় করেছেন নদী কমিশনের প্রতিনিধিদল। নদী কমিশনে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকালে এ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনে নেতৃত্ব দেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের উপ-প্রধান মোঃ সফি উল্লাহ। যৌথ কমিশনের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান প্রতিনিধি দল।
স্থানীয় এলাকাবাসী জনৈক হাজী নাছির মিয়া নদী কমিশনে অভিযোগ করে জানান, বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজনে এপিএসসিএল কর্তৃপক্ষ সোহাগপুর ও বাহাদুর মৌজায় নতুন করে আরো ৩শ‘ একর জমি অধিগ্রহনের উদ্যোগ নিলে জনগণের বাধার মুখে তা সম্ভব হয়নি। তাই তারা কৌশল পরিবর্তন করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রেষ্ট হাউজের পিছনে সীমানা প্রাচীরের বাইরে মেঘনা নদীর চর ভরাট করে এবং নতুন করে প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ কাজ শুরু করে। ভরাটকৃত স্থানে আগে সারা বছর পানি থাকতো এবং এখানে বড় বড় নৌকা ভিড়তো। স্থানীয় লোকজন ধানসহ বিভিন্ন ফসল আবাদে ব্যবহার করে আসছিল। নদীর এ জায়গা ভরাটের কারণে নদীর গতিপথে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। বর্ষাকালে ¯্রােতের তীবত্রতার চাপ পড়বে আশুগঞ্জ বন্দরে এবং মেঘনার বুকে জেগে উঠা অবহেলিত প্রাচীন চরসোনারাম পুরে। ফলে ব্যাপক ভাঙ্গনের মুখে পড়ে কয়েকশ মৎস্যজীবী পরিবারের বসবাস এ চরটি বিলীন হয়ে যেতে পারে। এতে চরে অবস্থিত ২৩০ কেভি আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের রিভারক্রসিং টাওয়ার হুমকিতে পড়বে। এসবের প্রতিকার চেয়ে নদী কমিশন ও বিআইডব্লিউটিএতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এপ্রেক্ষিতে নদী কমিশন ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। প্রতিনিধিদল সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে উপজেলা প্রশাসন, বিদুৎকেন্দ্রে কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের স্থানীয় প্রতিনিধিগণের সাথে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময় শেষে জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধিদলের প্রধান মোঃ সফি উল্লাহ বলেন, যৌথ কমিটি (উপজেলা প্রশাসন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ) গঠন করে ভরাটকৃত এলাকা পরিমাপ করা হবে। যৌথ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন আশুগঞ্জের ইউএনও অরবিন্দ বিশ্বাস, সহকারি কমিশনার (ভুমি) ফিরোজা পারভীন, নদীরক্ষা কমিশনের সহকারি প্রধান মোঃ তৌহিদুল আজিজ, সহকারি পরিচালক মোঃ আশরাফুল হক, আশুগঞ্জ-ভৈরব নদীবন্দরের কর্মকর্তা মোঃ শহীদ উল্যাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনজন কুমার দাসসহ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।