কয়রায় বিনা চাষে আলুর আবাদ কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কোন চাষ ছাড়াই কাদার মধ্যে রবি ফসল আলু উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, সরেজমিন গবেষণা বিভাগ এমএলটি সাইট কয়রা কৃষকদের কে আলু উৎপাদনে বিনামুল্যে বীজ, সার, কীটনাশক দেওয়ার পাশাপাশি নানা রকম পরামর্শ প্রদান করছে। কয়রার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালে কয়রা উপজেলার কয়রা সদর ইউনিয়নের ৩ নং কয়রা গ্রামে রবীন্দ্র ঢালী ১৬ শতাংশ জমিতে বিনা চাষে আলু চাষ শুরু করেন। তার এ অভিনব চাষাবাদ দেখে এলাকার অনেক কৃষক সরেজমিন কৃষি গবেষণা বিভাগের পরামর্শক্রমে বিনা চাষে আলু আবাদে ঝুকে পড়েছে। মহারাপুররের কৃষক আঃ হালিম জানান, বিগত বছর স্থানীয় কৃষক রবীন্দ্র ঢালীর বাড়ীতে বিনা চাষে আলু উৎপাদন দেখে তার মধ্যে আগ্রহ জাগে। তিনি বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পরই সরেজমিন গবেষণা বিভাগের সহযোগিতায় পানি সরে যাওয়ার পরই কাদার মধ্যে ৩৩ শতক জমিতে বিনা চাষে আলু রোপন করে। আলুর ক্ষেতে খড়কুটা দিয়ে ঢেকে দেন। তার এ পদ্ধতি চাষ করা দেখে প্রতিবেশিরা তাকে নানা কথার মধ্যে অনেকেই তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করত। আঃ হালিম ও রবীন্দ্র ঢালী বিনা চাষে আলু চাষ করে লাভবান হওয়ায় অনেকেই এখন স্বপ্ন দেখছে এই চাষাবাদের জন্য। এদিকে বিনা চাষে আলু বাম্পার ফলন দেখে আগামীতে এ ধরনের আলু আবাদ বৃদ্ধি পাবে এই এলাকায় এমনটি ধারনা অনেকের। উপকূলীয় লবণাক্ত জমিতে আলুর ভাল ফলন দেখে কৃষি গবেষণা বিভাগ ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা এ পদ্ধতিতে আলু চাষের পরামর্শ দিচ্ছেন। কম খরচে এবং কম সার ও পানি ব্যবহার করে বেশি ফসল পাওয়া যাবে তাদের এ ধরনের পরামর্শ কৃষকর আগ্রহী উঠছে। কৃষি বিভাগের এমএলটি সাইটের কয়রার দায়িত্বরত বৈজ্ঞানিক সহকারি জাহিদ হাসান বলেন, এলাকায় পতিত জমি দেখে বিনা চাষে আলু রোপন করতে উদ্বুদ্ধ করেন কৃষকদের। প্রথমে কেউ রাজি না হলেও পরে রাজি হয়ে ঝুকি নেন আঃ হালিম। ৩৩ শতক জমিতে রোপন করেন ২২০ কেজি আলুর বীজ। আর এতেই বাম্পার ফলন পেয়েছে তিনি। সনেজমিন কৃষি বিভাগ খুলনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ হারুনর রশিদ বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় দক্ষিণাঞ্চলে আমন ধান কাটার পর বিস্তীর্ণ জমি পতিত থাকে। মূল কারণ দীর্ঘ জীবন কাল সম্পন্ন আমন ধান, এটেল মাটি, স্বল্পমেয়াদি শীত এবং জমিতে “জো” না আসা। এই সকল প্রতিকুল পরিবেশে মোকাবিলা করার জন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ধাবিত লবণ ও তাপ সহনশীল আলুর জাত বারি আলু- ৭২, ৭৩, ও ৭৮ এ ধানের খড় ব্যবহার করে বিনা চাষে আলু উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন।