কালোপাহাড়। এর আর এক নাম বাদিমন পাহাড়। এই কালো পাহাড়ে যাওয়া সহজ নয়, কেননা যাওয়ার নেই কোনো রাস্তা। ১ মার্চ সোমবার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইয়াছিন পরিদর্শনে যান দুর্গম এই মধ্য পাড়া এলাকায়।
মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পৌঁছেছে সেখানেও। সুবিধাভোগী রিপন চাকমার বাড়িতে গেলেন লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইয়াছিন। উপজেলা সদর থেকে গাড়ি চলাচলের কোনো ব্যবস্থা নেই। ছড়ায় ছড়ায় যেতে হয়। পানির মধ্য দিয়ে মোটরসাইকেল যোগে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় কিছু পথ যাওয়া গেলেও বাকি পথ পাঁেয় হাঁটার। ইউএনও স্যার’র আন্তরিকতা ও সহযোগিতা এবং এলাকাবাসীসহ আমরা পরিবারের সবাই মিলে শ্রম দিয়ে সরকারের দেয়া এই পাকা ঘরটি নির্মাণ করেছি। এমনটাই জানালেন রিপন চাকমা। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমাকে ঘর উপহার দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এলাকা ঘুরে জানা গেলো ৮৫ পরিবারের বসবাস এখানে। ছড়া থেকে ৩০০-৪০০ফুট পাহাড়ের উপরে মানুষের বসবাস। উচুঁ-নীচু পাহাড়। লাঠির সাহার্য ছাড়া পাহাড়ের উপরে উঠা অনেকটা অসম্ভব। কালো পাহাড়ের চূড়ায় পানির পাইপ বসিয়ে (জিএফএস) এর মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হয়েছে দোজর পাড়া, তুল্যাকার্বারী পাড়া ও মধ্য পাড়ার প্রায় ১০০পরিবারের মাঝে। ২০১৮-২০১৯সালে প্রায় ৩৫হাজার পাইপ সংযোগ দিয়ে বাড়ি বাড়ি পানি সরবরাহ করা হয়। দুল্যাতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ত্রিলন চাকমা বলেন, টিউবওয়েল কিংবা রিংওয়েল কোনোটাই এখানে স্থাপন করা সম্ভব না। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কালাপাহাড় থেকে পাইপলাইন সংযোগ দিয়ে পানি সরবরাহ করা হয়েছে।
তুল্যাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপজেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় ওঠান বৈঠক। প্রায় ৫০জন নারী এই ওঠান বৈঠকে অংশ নেন। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইয়াছিন বলেন, আপনারা কত কষ্টে জীবন-যাপন করেন না আসলে বুঝতাম না। এই কষ্ট দূর করতে হলে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে হবে। বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে হবে। আমার সাধ্যমত আপনাদের জন্য কিছু করতে পারার চেষ্টা থাকবে। এ সময় তুল্যাকার্বারী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পক্ষ হতে পাকা ভবন নির্মাণ ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণের দাবি করা হয়। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে ইউএনও আশ্বাস দেন।
উপজেলা প্রকৌশলী মোস্তফা মিনহাজ, উপজেলা প্রাণী সম্পদ বর্মকর্তা সুপর্না দে, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো: সোহরাব হোসেন, উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা কামরুজাজামান, সাংবাদিক মো: মোবারক হোসেন, উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা পপি রায়, তথ্য সহকারি মিথিলা জান্নাত বিথি, বিশিষ্ট ঠিকাদার আবুল কালাম, দুল্যাতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ত্রিলন চাকমা, মহিলা মেম্বার কুসুমতারা, ৮৮নং বানরকাটা মৌজা হেডম্যান সুপ্রীতি দেওয়ান ও পাড়া কর্মী ববিতা চাকমাসহ শিক্ষকগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।