চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে পৌর নির্বাচন পরবর্তি সহিংসতায় পুলিশের এক কনেষ্টবলসহ আহত ৪ জন। এ ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় আসামি দুই শতাধিক। আটক ১৪ জন। পৌর এলাকায় আওয়ামী পরিবারে পুরুষ শুন্য। গত ২৮ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচন পরবর্তি ১মার্চ সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম বাবু (চামুচ প্রতীক) এর সমর্থক আ.লীগের প্রবীণ নেতা বানী ইসরাইলের সাথে কথাকাটাকাটির সময় তার ভাতিজা বজলু রহমান নাচোল পৌর আ.লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদুজ্জোহাকে শারিরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনা মুহূর্তে এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নৌকা প্রতীক ও চামুচ প্রতীকের সমর্থকেদের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে নাচোল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চামুচ প্রতীকের সমর্থকরা নৌকা প্রতীকের নেতা-কর্মীদের উপর লাঠিশোটা নিয়ে চড়াও হওয়ার চেষ্টা করলে নাচোল থানা পুলিশ লাঠিচার্জ করে উভয়পক্ষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে নাচোল মধ্যবাজার কাঠপট্টি চত্বরে মেয়র আবদুর রশিদ ঝালু খানের সাথে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থকরা আলোচনার করার সময় নাচোল থানা পুলিশের টহলদল অতর্কিত ভাবে এলোপাথাড়ি লাটিচার্জ শুরু করে। এ ঘটনায় নাচোল উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর প্যানেল মেয়র ফারুক আহম্মেদ বাবু (৩৫)সহ নাচোল মধ্যবাজার মহল্লার মুন্না (২৪) ও মুক্তার হোসেন (২৩) আহত হয়। আহতদেরকে নাচোল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ফারুক আহম্মেদ বাবুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অপর দিকে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় কর্মী-সমর্থকদের ছুড়া ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের কনেষ্টবল আজমল হোদা আহত হয়। আহত কনেষ্টবল আজমলকে প্রথমে নাচোল হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু অধা ঘণ্টা পর নাচোল থানা পুলিশ পুনরায় আজমলকে নাচোল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে রামেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে এএসপি গোমস্তাপুর সার্কেল নাচোলে উপস্থিত হন এবং ঘটনার পূর্বাপর অবহিত হয়ে আওয়ামী লীগের উভয় গ্রুপের নামে-বেনামে ২শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে পুলিশবাদী মামলা দায়েরের পাশাপাশি আসামীদেরকে আটকের জন্য ডিবি ও থানা পুলিশের যৌথ নের্তৃত্বে ৫টি টিম গঠন করে অভিযানের নির্দেশ দেন। এরপর পুলিশ গভীর রাতেই পৌর আওয়ামী লীগের বাড়িতে বাড়িতে দরজা ভেঙ্গে বেপরোয়া হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদেরকে আটক করে মামলার অজ্ঞাত আসামীর তালিকায় যুক্ত করে জেলহাজতে প্রেরণ করার অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা। পুলিশের যথেচ্ছা আটক এবং অজ্ঞাত আসামি হিসেবে জড়িয়ে দেয়ার ভয়ে নাচোল পৌর এলাকায় আওয়ামী পরিবারে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় ২ মার্চ বিকেলে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জান্নাতুন নাঈম মুন্নির নেতৃত্বে অর্ধ শতাধিক মহিলা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ করে একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন। স্বারক লিপিতে তারা নাচোল থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ সেলিম রেজা, ও দারোগা গোলাম রসুল এর বদলীসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান। তবে ঘটনার বিষয়ে নাচোল থানার ওসি সেলিম রেজা সাংবাদিকদের কোন প্রকার তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।