নীলফামারীর সৈয়দপুর রেল স্টেশন থেকে পাশ্ববর্তী রেলওয়ে স্টেশনে যেতে দেয়া হচ্ছে না ট্রেনের যাত্রী টিকেট। নিয়মিত সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল করছে ওই সকল স্টেশনে। অথচ ট্রেনের টিকেট বন্ধ থাকার পরও ওই সকল রেলওয়ে স্টেশন থেকে যাত্রিরা যাতায়াত করছে নিয়মিত। তাহলে ওই সকল যাত্রির টিকেটের টাকা যাচ্ছে কোথায়। তাছাড়া টিকেট হিসাবই বা করা হচ্ছে কিভাবে। অনেকে মন্তব্য করছেন এ টাকা অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেটে যাচ্ছে না তো।
এ এলাকার মানুষকে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পাশ্ববর্তী নীলফামারী,ডোমার,চিলাহাটি, পার্বতীপুর, ফুলবাড়িসহ আশপাশ এলাকার বিভিন্ন স্থানে ট্রেনে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু এসব স্থানে যাতায়াতের জন্য টিকেট দেয়া হচ্ছে না রেলওয়ে স্টেশন কাউন্টার থেকে। যাত্রিরা টিকেট না পেয়ে বাধ্য হয়ে টিকেট ছাড়াই ট্রেনে উঠছেন। আর এসকল যাত্রিদের ট্রেনে উঠে পড়তে হয় ভাড়া পরিশোধের বিড়ম্বনায়। ট্রেনে ভাড়া আদায়ের দায়িত্বে থাকা কর্তারা এ সকল যাত্রিদের নানাভাবে ভয় দেখিয়ে জরিমানাসহ ভাড়া আদায় করলেও তাদের দেয়া হচ্ছে না কোন টিকেট। শহরের মিস্ত্রিপাড়া এলাকার আমিনুর রহমান (৩৫) বলেন, বিভিন্ন প্রয়োজনে সৈয়দপুর স্টেশন থেকে ট্রেনে আমাকে যেতে হয় চিলাহাটিতে। যাওয়া কিংবা আসার সময় টিকেট পাওয়া যায় না। ফলে ট্রেনে উঠে ভাড়া পরিশোধ করলেও রশিদ পাওয়া যায় না। আর রশিদের কথা বললেই ভয়ভীতি দেখানো হয়।
বুধবার স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে পাশ্ববর্তী নীলফামারী, ডোমার, চিলাহাটি এবং দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর, ফুলবাড়ি, বিরামপুর যাওয়ার টিকেটের জন্য কাউন্টারে ভীর করছিলেন যাত্রিরা। এ সময় টিকেট কাউন্টার থেকে জানানো হচ্ছিল এসব স্থানে যাওয়ার টিকেট বরাদ্দ নেই। রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার রেজাউল হক ও মিজানুর রহমান বলেন, আমরা দিনাজপুর জেলার বিরামপুরে যাব। কিন্তু টিকেট পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে ট্রেনে উঠে টিটিকে টাকা দিয়ে যেতে হবে।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর রেল স্টেশনের বুকিং অফিস সূত্র জানায়, সৈয়দপুর থেকে নীলফামারী তিতুমীর ও বরেন্দ্র ট্রেনের ভাড়া ৪৫ টাকা, ডোমার ও চিলাহাটি পর্যন্ত ৫৫ টাকা এবং নীলসাগর, সীমান্ত ও রূপসার ভাড়া ৫০ টাকা ও ৬৫ টাকা। অপরদিকে পার্বতীপুর পর্যন্ত তিতুমীর ও বরেন্দ্র ট্রেনের ভাড়া ৪৫ টাকা এবং ফুলবাড়ি ও বিরামপুর ৫৫ টাকা। নীলসাগর ও রূপসা ট্রেনের ভাড়া পার্বতীপুর ৫০ টাকা, ফুলবাড়ি ৬৫ টাকা এবং বিরামপুর ৮৫ টাকা।
সৈয়দপুর স্টেশন মাস্টার এস এম শওকত আলী বলেন, করোনার পরিস্থিতির শুরুতে বেশ কিছুদিন স্টান্ডিং টিকেট বন্ধ ছিল। এরপর চালু হলেও গত ২০ জানুয়ারী থেকে আবারো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা না থাকায় আসন বরাদ্দের বাইরে কোনো টিকেট বিক্রি করতে পারছি না। তিনি আরও জানান, বিনা টিকেটের যাত্রীরা ট্রেনে টিকেট নিতে চাইলে জরিমানা প্রদান করতে হয়। সে জরিমানার পরিমান গন্তব্যের ভাড়ার সমপরিমান।