জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির দায়ে ৬ জন শ্রমিকসহ বালুবাহী ৬টি বুলগেট আটক করে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক। ওই জরিমানা প্রদান করা হয়।
জানা যায়,শুক্রবার (৫ মার্চ) দুপুরে ইসলামপুর উপজেলার পাথর্শী ইউনিয়নের মোরাদাবাদ ঘাট এলাকায় যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালুবাহী ৬টি বলগেট ট্রলার স্থানীয়রা আটক করে। খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী হাকিম মো. রোকনুজ্জামান খান ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
এ সময় তিনি অবৈধ বালুবাহী ৫টি বুলগেট ট্রলার জব্ধসহ ৬ জন শ্রমিককে আটক করেন। পরে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে আটককৃত
প্রত্যাককে মাথাপিছু ১ লাখ টাকা হারে জরিমানা করেন।
দ-প্রাপ্তরা হলো- দেওয়ানগঞ্জের চুকাই বাড়ী ইউনিয়নের ডালবাড়ী এলাকার আলাল মিয়ার ‘মা-বাবার দোয়া-২ নামের বুলগেটের শ্রমিক মিলন (৩৫), বালু গ্রাম দক্ষিণপাড়ার আবদুর রহিম বাদশার 'মা-বাবা দোয়া-৪' বুলগেটের শ্রমিক আবদুস ছালাম (২৩), একই গ্রামের জামাল সেখের বুলগেটের শ্রমিক সালমান (২২), বেলতলী ডাকপাড়া গ্রামের আবদুস ছাত্তারের মায়ের আঁচল বুলগেটের শ্রমিক বিল্লাল হোসেন (৩০)।
এছাড়া পার্থশীর শশারিয়া বাড়ী গ্রামের লিখন মিয়ার সুগন্ধা-১ নামের বুলগেটসহ অবৈধ বালুবাহী ৬টি বুলগেট জব্দ করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় হাসানুজ্জামান, নয়ন আলী, ছাইফুল, শাহিন, সুমন, লিখন, ও পাশ্ববর্তী দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার তমসের মেম্বার, আলাল, সাত্তার, দুলা, তারা মিয়া ধুলু, নয়া মিয়া, রং মিয়াসহ একটি বালুখেকো সিন্ডিকেট যমুনা নদীর অভ্যান্তরের কুলকান্দি ইউনিয়নের চরবেড়কুশা গ্রামের নিকটসহ নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বুলগেট ও ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে।
ইসলামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস.এম. জামাল আব্দুন নাছের বাবুল ইতোমধ্যে অবৈধ বালু ব্যাবসায়ীদের সর্তক করতে নোটিশ দিয়েছেন। বালু উত্তোলনের ফলে চরবেড়কুশা গ্রামটি যমুনা গর্ভে বিলীনের হুমকিতে পড়েছে।
এছাড়া যমুনার বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্প ও বাধেঁর ভয়াবহ ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।
এলাকাবাসী এ ব্যাপারে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিকবার অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার পায়নি। ক্ষোব্ধ এলাকাবাসী যমুনার বুকে জেগে উঠা নিজেদের ফসলী জমির চর, বাঁধ ও গ্রাম রক্ষা করতে অবৈধ বালুবাহী ৬টি বুলগেট ট্রলার আটক করে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক মো. রোকনুজ্জামান খান জানান, 'জরিমানার টাকা জমা দিয়ে দ-প্রাপ্তরা ছাড়া পেয়েছে।'
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস. এম. মাজহারুল ইসলাম জানান, 'প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া নদী থেকে বালু উত্তোলন করা অপরাধ। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের নজরদারি অব্যাহত থাকবে।'