সৈয়দপুরে কুকুরের উপদ্রুপে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষ। কুকুরের কামড়ে শেষ পর্যন্ত ১৮ জন জখম হয়েছে। কুকুরের কামড়ের শিকার হয়েছে ৫ শিশুসহ ১৮ জন। ফলে সৈয়দপুরে কুকুরের কামড়ের হাত থেকে বাঁচতে রাত জেগে পাহারা বসানো হয়েছে পাড়া-মহল্লায়। পাগলা কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে এখন সব কুকুরকেই এলাকা ছাড়া করতে লাঠি হাতে রাস্তায় নেমেছে যুবকরা। এতে অন্যরকম এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া সৈয়দপুরে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন না থাকায় নীলফামারী জেলা সদর হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে আক্রান্তদের।
স্থানীয়রা জানান গত ৭ মার্চ সাহেবপাড়া এলাকার কামালের ছেলে ইসমাইল বাড়ির পাশে রাস্তায় খেলার সময় হঠাৎ করে পিছন থেকে একটি কালো রংয়ের কুকুর এসে পড়নের প্যান্টের ওপর দিয়েই নিতম্বে কামড়ে ধরে। এতে তার নিতম্বের মাংস অনেকটাই কামড়ে ছিড়ে নেয় কুকুরটি। বড় ভাই ইব্রাহিম তাকে উদ্ধার করতে গেলে তারও পায়ে কামড় দেয় কুকুরটি। এদিকে ওই দিনই মিস্ত্রিপাড়া মোড় সংলগ্ন এলাকায় কালো রংয়ের একটি কুকুর হঠাৎ পায়ে কামড়ে দেয় মুন্নার স্ত্রী শাবানাকে। এ সময় এলাকার আরও ৩ জনকে কামড় দেয় কুকুরটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন পৌরসভার নব-নির্বাচিত সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর মোছা. রুবিনা সাকিল। এ সময় মিস্ত্রিপাড়ার রাজুর ছেলে হাসানকে (৬) কামড়ে গালের মাংস খসিয়ে নেয় কুকুরটি। এতে তার ৮টি সেলাই দিতে হয়েছে। অপরপাশে সৈয়দপুর বাসটার্মিনাল এলাকায় কুকুরের কামড়ের শিকার হয় আসিক। একইভাবে ওইদিন মিস্ত্রিপাড়া সেতু কারখানা সংলগ্ন এলাকাসহ ওয়াপদা মোড়, গোলাহাট এলাকাতেও কুকুরটির আক্রমণের শিকার হয় আরও ১০ জন।
আক্রান্তরা দ্রুত সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের তাৎক্ষণিক নীলফামারী জেলা সদর হাসপাতালে পাঠান। পরে তারা সেখান থেকে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নেন।
সৈয়দপুরে প্রায়ই কুকুরের কামড়ে লোকজন আক্রান্ত হলেও এখানে ভ্যাকসিন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। নয়তো সরকারি হাসপাতালের বাইরে কোন ফার্মেসি থেকে অতিরিক্ত দামে ভ্যাকসিন কিনে ব্যবহার করতে হয়। দরিদ্র মানুষের পক্ষে তা নেয়া সম্ভব না হওয়ায় দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নীলফামারী গিয়ে নানা ঝক্কি ঝামেলার পর ভ্যাকসিন নিতে হয়। এতেও তাদের অনেকটা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. ওমেদুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কুকুরের কামড়ে আক্রান্তদের হাসপাতালে আসা মাত্রই দ্রুত ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য নীলফামারী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারা সেখানে যথাযথভাবে ভ্যাকসিন নিয়েছেন এবং এখন সুস্থ আছেন। সৈয়দপুরে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় এবং সব সময় প্রয়োজন না হওয়ায় জেলা সিভিল সার্জনের অধীনে ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হচ্ছে।