রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী মোঃ. নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ‘বিগত সময়ে রেলসেবা ভেঙ্গে পড়েছিল। সে অবস্থা থেকে কাটিয়ে উঠতে বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে লোকবল সংকট থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আর রেলসেবা ত্বরান্বিত করতে খুব শিগগিরই ১০-১৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা চলছে। এখন রেল ব্যবস্থাকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। আর এ লক্ষে আধুনিকতার সাথে তাল মিলিয়ে রেলের উন্নয়ন করতে চাই।’
শনিবার (১৩ মার্চ) সকালে রাজশাহীর মনিবাজারে নানকিং দরবার হলে রেলওয়ে স্টেশনে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ/সংস্কারসহ ওয়াশ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন এবং পারস্পারিক শিখন বিষয়ক কর্মশালা’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল রেলওয়ে। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে রেল ব্যবস্থার সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে তাঁকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে রেলের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পিছিয়ে পড়া রেলের ক্ষতি কাটিয়ে রেলওয়ে ব্যবস্থাকে আরো সমৃদ্ধ করতে কাজ করছেন।’
তিনি বলেন, ‘রেলওয়েকে এগিয়ে নিতে সেকেলে চিন্তা-চেতনা পরিবর্তন করে রেলওয়েকে এগিয়ে নিতে নতুন নতুন চিন্তা-চেতনা যোগ করতে হবে। আমরা দেখতে চাই রেলওয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো যাত্রীর যেন অভিযোগ না থাকে। একই সাথে যাত্রীদের সাথে ভালো ব্যবহারের চর্”া গড়ে তুলতে হবে। আর বাংলাদেশ রেলওয়েকে সম্পূর্ণ আধুনিক করার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে বর্তমান সরকার। আমরা রেলকে একটি নিয়মতান্ত্রিক অবস্থায় আনতে এবং যাত্রীসেবার মান নিশ্চিত করার মাধ্যমে রেলের নিজস্ব সক্ষমতা তৈরি করতে চাই।’
তিনি আরো বলেন, ‘রাজশাহী-আব্দুলপুর পর্যন্ত ডাবল লাইন এবং সমস্ত রেল ব্যবস্থাকে ব্রডগেজ লাইনে রূপান্তর করার কাজ চলছে। প্রতিটি জেলার সাথে রেল লাইনের সংযোগ থাকবে। ঈশ^রদী-জয়দেবপুর পর্যন্ত ডাবল লাইন করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। কারো সাথে শক্রতা নয়, সবার সাথে বন্ধুত্ব এই নীতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ওয়াটার এইড এর সহায়তায় বাংলাদেশ রেলওয়ের উপযুক্ত স্থানে অন্ততঃ ৩টি স্টেশনে ক্রমান্বয়ে ৩টি মানসম্পন্ন পাবলিক টয়লেট সংস্কার/নির্মাণ করা হবে। সকলের জন্য পানি ও স্যানিটেশনের টেকসই ব্যবস্থাপনা এবং প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ, ‘কাউকে বাদ দিয়ে নয়’ এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পাবলিক টয়লেটসমূহ যাত্রী, পথবাসী ও পথচারীদের স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানির চাহিদা মেটাতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
মহাপরিচালক ডি এন মজুমদারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী, মহাপরিচালক (পশ্চিম) মিহিরকান্তি গুহ, বাংলাদেশ ওয়াটার এইড এর কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান ও মন্ত্রীর একান্ত সচিব মো. আতিকুর রহমান প্রমুখ।